• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

প্রায় শেষ বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ

প্রকাশ:  ১৫ জুন ২০২৩, ১৪:৪৬
পূর্বপশ্চিম প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু টানেলের সম্মুখ ভাগ। ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। বহুল প্রতীক্ষিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদী তলদেশের বহুল প্রতীক্ষিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ টানেলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজের সামগ্রিক অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমরা মূল টানেলের ৯৯.৫% কাজ শেষ করেছি এবং প্রকল্পের নির্মাণকাজের সার্বিক অগ্রগতি ৯৭.৫%। এখন টানেলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।”

তিনি আরও বলেন, “টানেলটি চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউনস'-এ পরিণত করবে। এটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত হচ্ছে এবং এই বছরের সেপ্টেম্বরে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করবেন।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরকে সরাসরি আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করবে মাল্টিলেনের এই টানেলটি। এছাড়াও কক্সবাজারকে চট্টগ্রামের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, “টোল প্লাজা সংক্রান্ত ক্রস প্যাসেজ ও টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।”

এর আগে, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, “টানেলটি এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। টানেলটি চালু হলে এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হবে, যা দেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা এনে দেবে।”

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ড্রেনেজ সিস্টেমের নির্মাণকাজ এবং পাম্প স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, ৩৫ ফুট চওড়া ও ১৬ ফুট উঁচু দুটি টিউব ১১ মিটার ব্যবধানে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে ভারী যানবাহন সহজে টানেলের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারে। নির্মাণাধীন টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩.৪০ কিলোমিটার। যাতে ৫.৩৫ কিলোমিটারের একটি এপ্রোচ রোড ও একটি ৭৪০ মিটার ব্রিজের পাশাপাশি মূল শহর, বন্দর এবং নদীর পশ্চিম দিককে এর পূর্ব দিকের সাথে সংযুক্ত করবে।

প্রকল্পের অংশ হিসেবে, প্রধান বন্দর নগরী ও কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম পাশকে নদীর পূর্ব দিকে এবং আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করে মোট ৭৪০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউবের কঠিন এই কাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

টানেলটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়েকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করবে এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে আনবে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এই টানেলে যানবাহন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে চলাচল করবে। ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২% সুদের হারে পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বাকি অংশের অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।

বঙ্গবন্ধু টানেল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close