• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিসহ সংস্কার দাবি

প্রকাশ:  ১১ আগস্ট ২০২৩, ২০:১২
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতৃবৃন্দ বলেছেন, চলতি নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকারিতা হারিয়েছে। আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া এখন বাংলাদেশের মানুষের প্রধান দাবি। এই মূহূর্তে এর কোনো বিকল্প নেই। কাজেই জনগণের দাবিকে মেনে নিয়ে সরকারে অবিলম্বে এ ব্যবস্থা নিতে হবে। হামলা-মামলা দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করা যাবে না। এই মুহূর্তে দল নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে, ঐ সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে। নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন করে বলেন, আমেরিকা, ভারতের কথায় নির্বাচন হবে, নাকি দেশের জনগণের কথায় নির্বাচন হবে? নেতৃবৃন্দ সাম্রাজ্যবাদী, আধিপত্যবাদী অপশক্তিকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন জনমত উপেক্ষা করার পরিণতি ভালো হবে না।

আজ ১১ আগস্ট ২০২৩, শুক্রবার, বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জনসভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

পার্টির সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রমিকনেতা মাহবুব আলম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল, হাফিজুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় প্রেসিডিয়াম সদস্য শামছুজ্জামান সেলিম, শাহীন রহমান, অধাপক এ এন রাশেদাসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিনা ভোটে ঘোষিত এ অগণতান্ত্রিক সরকার বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

শাসক গোষ্ঠী এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে, এ সরকারসহ কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরেপক্ষ নির্বাচন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

সমাবেশে মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, যে নির্বাচন ব্যবস্থা, টাকার খেলা, পেশীশক্তি, প্রশাসনিক কারসাজির খেলা সরকারগুলো বহাল রেখেছে তাতে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটার কোনো সুযোগ নাই। এ ভোটের নামে প্রহসন, গদি পরিবর্তন জনগণের জীবন মানের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। কাজেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংষ্কার করতে হবে। পুরো ব্যবস্থা বদল করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষমতায় যারা আছে এবং যারা শুধুমাত্র ক্ষমতায় যেতে চায় কেউই জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করেনা। তারা বিদেশি শক্তির উপর ভর করে মসনদে বসতে চায়। এজন্যই বিদেশিদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দেয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে এরকম কোনো হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না। যারা এর মদদ যোগাবে তাদেরও উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।

সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এই সরকার সাধারণ জনগণ, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে নাই। উপরন্তু একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনজীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছে। অনিয়ন্ত্রিত বাজার সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোয় মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দুর্নীতি-লুটপাট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সরকারের সর্বত্র আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নাই বরং একের পর এক বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে হামলা-মামলা করে দমন করার অপচেষ্টা করছে। সরকারি দল, বিরোধী দলের পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অগণতান্ত্রিক শক্তির তৎপরতা বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, পুঁজিবাদী লুটপাটতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদ দেশ ও জাতির শত্রু। এদের ছাড় দিয়ে গণতন্ত্রকে স্থায়ী করা যাবে না। এদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে হবে। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ দূর করতে সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়তে হবে। তিনি দুঃশাসনের অবসানে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রামে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে জেলা উপজেলায় জনসভা। সেপ্টেম্বরে ভোট ও ভাতের দাবিতে গণজাগরণ অভিযান এর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল করে সিপিবির শতশত নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ এ সমাবেশে যোগ দেন।

এসব দাবিতে সারাদেশে সমাবেশ-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সিপিবি,তদারকি সরকার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close