• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ওষুধ ব্যবসায়ী-ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিবাদে অসহায় রোগীরা

প্রকাশ:  ১৭ আগস্ট ২০২৩, ১৪:৩৭
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সামনে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছে উভয়পক্ষ।

একদিকে হামলাকারীদের আটকের দাবিতে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অপরদিকে ওষুধ ব্যবসায়ীরাও দোকান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করছেন। দুই পক্ষের এই বিবাদের জেরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রোগীরা।

সেবা প্রত্যাশীরা বলছেন, হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই সেবা দিয়ে থাকেন। তবে তারা না থাকায় রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না। এছাড়া হাসপাতালের আশপাশের ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় দূর থেকে ওষুধ আনতে হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যার দিকে খুমেকের কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালের সামনের দোকানে ওষুধ কিনতে যান। তারা ওষুধে ১০% ছাড় চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এ খবর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে খুমেক শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ওষুধ ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালান। কিছুক্ষণ পর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বহিরাগতরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সেদিন রাতের মধ্যেই পুলিশ সব আসামিকে আটক করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সোমবার মামলাও করতে পারেননি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না।

ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানান, এক শিক্ষার্থী ওষুধে ১০% কমিশন চেয়েছিলেন। চাহিদা অনুযায়ী কমিশন না পাওয়ায় দুইজনের মধ্যে তর্ক হয়। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে দোকানে ভাংচুর করেন। এরই জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলার পর থেকেই দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

হাসপাতালের চিকিৎসক জ্যোতির্ময় বৈরাগী বলেন, “আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে, তারা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।”

ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, “হামলায় নয়জন ব্যবসায়ী আহত হন। শিক্ষর্থীরা একটি দোকানের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”

“যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

খুমেক হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ মেহেদী নেওয়াজ বলেন, “হামলার পর থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি আমরা। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা করিয়েছি। থানায় মামলা করার জন্য তাদের সঙ্গে ছিলাম। পরবর্তী সময় এই শিক্ষার্থীরা যেভাবে চাইবে সেভাবে তাদের সঙ্গে থাকবো।”

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উপ-পরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফিজ চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। রোগীদের ভোগান্তির বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ইন্টার্নি চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসক সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।”

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমতাজুল হক বলেন, “খুমেক হাসপাতালে সংঘাতের ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।”

ইন্টার্ন চিকিৎসক,আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close