• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

৫৫ কেজি সোনা উধাও: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চুরির মামলা

প্রকাশ:  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ঢাকা কাস্টমস হাউজের গোডাউন থেকে ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি সোনা উধাও হওয়ার ঘটনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গোডাউনের দায়িত্বে থাকা শিফট কর্মকর্তা, সরকারি রাজস্ব কর্মকর্তা ও সিপাহীসহ আট জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তাদের কাছ থেকে কোনও সন্তোষজনক উত্তর পায়নি। এ ঘটনায় রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামাদের। অপরাধ হিসেবে পেনাল কোডের ৩৮০ ধারায় গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে সোনার বার ও স্বর্ণালংকার চুরির মামলা দিয়েছে কাস্টমস।

ঢাকা কাস্টমস হাউজের এয়ারপোর্ট প্রিভেন্টিভ টিমের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর কাস্টমস হাউজের গুদাম কর্মকর্তা মাসুদ রানার মাধ্যমে যুগ্ম কমিশনারকে জানানো হয়, বিমানবন্দর লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ডস সংলগ্ন ট্রানজিট গোডাউন টিজিআর ১ এর গুদামের ভেতরে প্রবেশ করে তিনি দেখতে পান, মূল্যবান পণ্য সংগ্রহের জন্য গুদামে রাখা একটি স্টিলের দরজার লক ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। এ সময় তিনি আরও জানান, ২ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিদিনের মতো আটক করা পণ্য টিজিআর ১ এ জমা করে কাজ শেষে আনুমানিক রাত ১২টা ১৫ মিনিটে গোডাউনে তালা বন্ধ করে চাবি নিয়ে চার কর্মকর্তা একসঙ্গে বিমানবন্দর কাস্টমস এলাকা ত্যাগ করেন।

গোডাউন কর্মকর্তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের দায়িত্বরত যুগ্ম কমিশনার গোডাউন পরিদর্শন করেন। তিনি বিষয়টি কাস্টমস হাউস ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান।

মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, যুগ্ম কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও কমিশনার গোডাউন পরিদর্শনে গিয়ে ভেতরে একটি স্টিলের আলমারির লক ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। একইসঙ্গে গোডাউনে কর্মরত এ, বি, সি ও ডি এই চার শিফটের কর্মকর্তা মো, মাসুদ রানা, মো. সাইদুর রহমান শাহেদ, মো. শহিদুল ইসলাম এবং আকরাম শেখ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, মো. রেজাউল করিম মোহাম্মদ, মোজাম্মেল হক, মো. আফজাল হোসেন ও সিপাই পদে কর্মরত নিয়ামত হাওলাদারকে লক ভাঙার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় তারা কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।

পরবর্তীতে কমিশনারের মৌখিক নির্দেশনায় গোডাউনে রাখা মূল্যবান বস্তু, স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে কিনা তা যাচাই করার জন্য গোডাউন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা পাওয়ার পর কর্মকর্তারা রেজিস্টার পর্যালোচনা করে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর জানান, আলমারির মধ্যে রাখা ৪৮টি লকারের মধ্যে প্রায় ৮ দশমিক শূন্য দুই কেজি এবং ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময় আটককৃত ৪৭ দশমিক ৪৯ কেজি অর্থাৎ সর্বমোট ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি স্বর্ণ পাওয়া যাচ্ছে না।

২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ১৫ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে যেকোনও সময় কে বা কারা সোনার বার ও স্বর্ণালংকার গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। চোরাইকৃত সোনার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

বর্তমানে ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম পরিচালনা চলমান রয়েছে। তবে চূড়ান্ত ইনভেন্ট্রির পর একত্রে সোনার পরিমাণ নিশ্চিত করা যাবে।

ঘটনা স্পষ্ট সময় উল্লেখ করা থাকলেও আসামি অজ্ঞাতনামা কেন এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ ঘটনাটি নিয়ে আমি বেশ কয়েকদিন দৌড়ঝাঁপ করেছি। আমি কিছুটা টায়ার্ড রয়েছি। এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলুন।

ঢাকা কাস্টমস হাউসের ডিসি মো. মোকাদ্দেস হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনায় কাস্টমস হাউজের কেউ জড়িত থাকলেও কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

মামলার বিষয়ে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোর্শেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণসহ প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করা হচ্ছে।

কাস্টমস,চুরি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close