• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

যুক্ত থাকবেন হাসিনা-পুতিন

রূপপুরে ইউরেনিয়াম জ্বালানি হস্তান্তর আজ

প্রকাশ:  ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী ৩৩তম দেশ হিসেবে নিজের নাম লেখাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য রাশিয়া থেকে নিয়ে আসা ‌‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করা হবে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর)।

দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করা হবে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।

ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে (আরএনপিপি) এসেছে উচ্চপর্যায়ের রুশ প্রতিনিধি দল। প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করছেন মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের কাছে এই ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেস্কি লিখাচেভ। রাশিয়া থেকে আসা ইউরেনিয়াম শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছেছে।

এদিকে, পুরো প্রকল্প ও গ্রিনসিটি আবাসিক এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসবের সাজে সেজেছে ঈশ্বরদীর রূপপুর এলাকা। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিভিন্ন রঙের পতাকা শোভা পাচ্ছে। গ্রিনসিটি আবাসিকের সামনের প্রাচীরে রঙিন চিত্রকর্ম নজর কাড়ছে সবার।

একদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অন্যদিকে সাজসাজ রব। সব মিলিয়ে রূপপুর যেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ভিন্ন এক জায়গা। তবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে এখানকার মানুষ উন্মুখ হয়ে আছেন।

প্রকল্প পরিচালক ড. সৌকত আকবর ও প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ানসহ বিদেশি নাগরিকরা গ্রিনসিটি আবাসনে থাকেন। গ্রিনসিটির ভেতরে তাদের জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজন চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত।

১৯৬১ সালে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও গতি পায় ২০০৮ সালের পরে। তখন নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে আওয়ামী লীগ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে। ২০০৯ সালে দলটি ক্ষমতায় আসলে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেন।

২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ এগিয়ে নেয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ১ হাজার ৬২ একর জমির ওপর প্রকল্পের পূর্ণোদ্দমে কাজ শুরু হয়। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে দু’টি ইউনিট রয়েছে। প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে রাশিয়া। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, নির্ধারিত সময়ে চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

২০২৪ সালের মার্চে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সমপরিমাণ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটির উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে উল্লেখযোগ্য রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

হাসিনা-পুতিন,হস্তান্তর,জ্বালানি,ইউরেনিয়াম
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close