• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নেই

প্রকাশ:  ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২২:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনে যেন কোনো সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উত্থান না হয় এবং রাজনৈতিক দলগুলো যেন কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে মনোয়ন না দেন তা নিশ্চিত করতে হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সমৃদ্ধির সাথে সম্প্রীতির মেলবন্ধনে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন বক্তারা।

বুধবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‌‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’।

সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন ধর্মের নামে কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না। কিন্তু পচাত্তরে পাকিস্তানের চর জিয়া ও মোশতাকের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে অর্থ্যাৎ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করে পাকিস্তানপ্রেমী জিয়া ও মোশতাক ধর্মান্ধদের আবার রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। আজ আমরা ধর্মান্ধ একাত্তরের পরাজিত অপশক্তির ও তাদের দোসরদের আস্ফালন দেখে সত্যিই শঙ্কিত।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, বাংলাদেশে কখনো সাম্প্রদায়িকতা ছিল না, আমাদের হাজার বছরের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ধর্মীয় সমন্বয় ও সম্প্রীতির কথা বলা আছে। বাংলাদেশে চন্ডীদাস থেকে শুরু করে লালন শাহ,বুদ্ধদেব, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল সবাই সাম্যের কথা বলেছেন,শান্তির কথা বলেছেন সম্প্রীতির কথা বলেছেন- মানুষকে ভালোবাসার কথা বলেছেন। নির্বাচন এলেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এবং তারা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো যেন মৌলবাদী কিংবা সাম্প্রদায়িক কোন ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেন তার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

আলোচনা সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশের জিডিপি গ্রোথ বিশ্বের অনেক দেশের জন্য উদাহরণ। কিন্তু বাংলাদেশের সম্প্রীতির জিডিপির গ্রোথ নিম্নগামী। এটি যতক্ষন আমরা ঠিক করতে না পারি আমরা হয়তো অনেক উন্নত হব কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ আমরা পাব না।

শহীদ বুদ্ধিজীবি ডা. আলিম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, জামায়াত যেন অন্য কোনো নামে রাজনীতি না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াতকে যারা প্রশ্রয় দেয় তারা যেন রাজনীতির মাঠে না আসতে পারে সেজন্য সকল সচেষ্ট থাকারও আহবান জানান তিনি।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে হাজার হাজার বছর ধরে বসবাস করে এসেছি এই গাঙীয় বদ্বীপে। কিন্তু কখনো সাম্প্রদায়িকতার আস্ফলন আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। কিন্ত যখনই ধর্মকে রাজনীতির সাথে যুক্ত করা হয়েছে তখনই হানাহানি এবং সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর আহবায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এবং সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ডা. কামরুল হাসান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূইয়া, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফাওজিয়া মোসলেম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি হিসেবে ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল সাহা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, আইনজীবি ব্যারিস্টার ফারজানা মাহবুব প্রমুখ।

সম্প্রীতি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close