• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সনদ জালিয়াতির দায় ফেঁসে যাচ্ছেন দুই পাইলট

প্রকাশ:  ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:৫০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

সনদ জালিয়াতির দায় ফেঁসে যাচ্ছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুই পাইলট। তারা হলেন- পাইলট সাদিয়া আহমেদ ও আল মেহেদী ইসলাম।

অভিযোগ উঠেছে, ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নির্বাচিত আল মেহেদী ইসলাম জমা দিয়েছেন এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্সের (এটিপিএল) জাল সনদ। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেফটি বিভাগের সহকারী পরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে তিনি এই সার্টিফিকেট জমা দেন।

জানা গেছে, বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য পাঁচ বছরের চুক্তিতে আট জন ক্যাপ্টেন ও ছয় জন ফার্স্ট অফিসার নিয়োগ করতে ২০২১ সালে ২৩ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

সেখানে প্রাথমিকভাবে কয়েকজনকে নির্বাচন করা হয়, যাদের মধ্যে সাদিয়া আহমেদ ও আল মেহেদী ইসলামের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিলো।

বিজ্ঞান বিভাগে না পড়েও জাল শিক্ষা সনদ জমা দিয়ে নির্বাচিত হন সাদিয়া আহমেদ। তিনি বিমানের সাবেক চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। তার চাকরি জীবন শুরু হয় জিএমজি এয়ারলাইন্সের একজন ক্যাবিন ক্রু হিসেবে।

পরবর্তীতে সাদিয়া আহমেদ রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ও ইউএস-বাংলায় ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেলেও বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি, দুর্ঘটনা ও অদক্ষতার কারণে চাকরি হারাতে হয়।

সূত্র জানায়, সাদিয়া আহমেদ বিমানে যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন সেটি অনুযায়ী তিনি ২০০১ সালে আনোয়ার গার্লস কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তার রোল নম্বর ৩০০১০৬, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ৯৯৯৫৯১। শিক্ষা

বোর্ডে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, তিনি শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজের মানবিক শাখা থেকে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেছিলেন।

অথচ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, পাইলট হতে গেলে পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিতসহ এইচএসসি বা সমমানের সনদ থাকতে হবে। স্বামীর প্রভাবে সাদিয়া আহমেদ বিমানে নিয়োগ পান।

বিমানের চুক্তিতে বলা হয়, তার মূল বেতন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া হিসেবে পাবেন ৮৫ হাজার টাকা। যদিও পরে জালিয়াতি ধরা পড়লে চুক্তি বাতিল করে দায় এড়ান তৎকালীন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে সোচ্চার ছিলেন বিমানের পাইলটরাও।

বিমানের পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ২০২২ আগস্টে লিখিতভাবে বিমানে পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও দেশিয় আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ করে।

বাপাও বলেছে, বিমানের কর্মকর্তাদের স্বজনরা নিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়েছেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি শিক্ষা সনদ, নিবন্ধন সনদ, লাইসেন্স বা পারমিট জাল বা পরিবর্তন করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহলে অনধিক পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

এমন পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত দুই পাইলটের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। একই সঙ্গে তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে কঠোর শাসি্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সদ্ধিান্ত নিয়েছে বেবিচক।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, সাদিয়া আহমেদ ও আল মেহেদী ইসলাম বেবিচকে চাকরি করতেন না। তাদের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ ওঠে তখন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত ছাড়া তো কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তদন্তে তাদের জালিয়াতি প্রমাণিত হয়েছে।

এখন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

পাইলট,দায়,সনদ,জালিয়াতি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close