• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ কখনো গ্রহণ করেনি: সুলতানা কামাল

প্রকাশ:  ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ কখনো গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা সুলতানা কামাল। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এমএসএফ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় রাষ্ট্র যে খুব বেশি মনযোগী হয়েছে, এ কথা আমরা বলতে পারি না। যখন আমরা মানবাধিকারের কথা বলছি, সরকার অনেক বেশি ডিফেন্সিভ কথাবার্তা বলেছে, আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেছে। যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছে, তাদের একটি বৈরিতার জায়গায় নিয়ে গেছে। যেন মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের কোনো দায়দায়িত্ব নেই। বরং মনে হয়েছে মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের বিরক্ত করেছি, তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ কখনো গ্রহণ করেনি।

তিনি বলেন, সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকেই বেশি মনযোগী। সমাজে মানবাধিকারের নীতি বা বোধ জাগাতে সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো কর্মসূচি তাদের নেই। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেই চলবে, মানুষের মনমানসিকতার উন্নয়নের বিষয়ে তাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই।

মানবাধিকার ইস্যুতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলা হয়নি, তাদের অন্তর্নিহিত অনেক দুর্বলতা রয়েছে। যেখানে মানবাধিকার ইস্যুতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা সর্বজনগ্রাহ্য নাগরিক ব্যক্তিত্বদের, সেখানে বছরের পর বছর নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক যে ব্যবস্থাপনা, তাদের যে জনবল, তাদের যে তদন্ত করার ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। এ কমিশনের কাজগুলো হওয়ার কথা প্যারিস প্রিন্সিপালের আলোকে, তবে প্যারিস প্রিন্সিপালের নীতিগুলো ফলো করা হয়নি। এ কারণে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী, স্বাধীন কমিশন তৈরি করতে পারিনি।

এর আগে চলতি বছরে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরেন এমএসএফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাড. সাঈদুর রহমান। তিনি জানান, চলতি বছরে নির্বাচনী সহিংসতার ১৩৮টি ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। মুখোশ পরে গুপ্ত হামলার ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন।

সাঈদুর রহমান জানান, চলতি বছরে সারা দেশে ৪০০টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৪২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আর এসব সহিংসতার ঘটনায় ৪ হাজার ৭৭১ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়া প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২৩ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ১৫টি ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক অপহরণের অভিযোগ এসেছে ৮৯টি। এ বছরে পুলিশ হেফাজতে ১৭ জন, কারা হেফাজতে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে অজ্ঞাতনামা ৩৫২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে ৬২টি। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬৩ জন। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩২ জন। এ বছর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা কমে এসেছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ৮১টি, এ বছর তা নেমে এসেছে ৬৩টিতে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

সুলতানা কামাল,পদক্ষেপ,মানবাধিকার,সরকার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close