• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির পুনরাবৃত্তি চায় না ইসি

প্রকাশ:  ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৩০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ভোটের মাঠ এখন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিয়ন্ত্রণে দাবি করে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন ইসির ভাবনায় শুধু নির্বাচন। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে।”

বুধবার (৩ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি।

আগামী ৭ জানুয়ারি ২৯৯ আসনে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট হবে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নেমেছে।

ইসি রাশেদা বলেন, “ভোটকে কেন্দ্র করে যেখানেই অনিয়ম হবে সেখানেই নির্বাচন কমিশন অ্যাকশনে যাবে, প্রয়োজনে সে কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে।”

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ইঙ্গিত করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “এবার আন্তর্জাতিক অগ্নিপরীক্ষা ঠিক এই সেন্সে না, আসলে এই রকম একটা সেন্স, ইলেকশনটা যদি গ্রহণযোগ্য মাত্রায় না যায়, ওই সময় নানা রকম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটা ভোট হয়েছিল। ...তারপরে সেই ইলেকশনটি কিন্তু দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। এটা গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে কিন্তু অল্পদিনে আবারও একটা ইলেকশন হয়ে গেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মতো স্বল্প সময় স্থায়ী নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি চায় না ইসি।”

বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বর্জনের মুখে একতরফা ও বিতর্কিত এই নির্বাচন হয়েছিল বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন। ওই নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ৪৮টি আসনে ভোট গ্রহণের আগেই ক্ষমতাসীন বিএনপির প্রার্থীরা বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিতর্কিত সেই নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে বিএনপি পেয়েছিল ২৮৯টি আসন। ওই সংসদে আনুষ্ঠানিক কোনো বিরোধীদল ছিল না। একটি আসন পেয়ে বিরোধী নেতার চেয়ারে বসেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের স্বঘোষিত হত্যাকারী ফ্রিডম পার্টির সৈয়দ ফারুক রহমান। বাকি ১০টি আসন পান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

আন্দোলনের মুখে সেই বছরের ৩০ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পরামর্শে সংসদ ভেঙে দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাস। পদত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। এরপর প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্ঠা হিসেবে নিয়োগ করে গঠিত হয় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, “আমরা এই রকম কোনো ইলেকশন করতে চাই না যেটা নতুন করে দেশকে একটা সংকটের মধ্যে ফেলে। আমরা চাই একটা ইলেকশন হবে সরকার যে ফর্ম (গঠন) করবে, সেই সরকার স্থায়ী রূপ নেবে। যখনই সরকার অস্থায়ী অবস্থায় চলে যায় দেশ তখন বিপর্যয়ের মধ্যে চলে যায়। এই সেন্সে থেকে হয়তো আমাদের মাথায় এসেছে আমরা একটা ফেয়ার ইলেকশন করব। আন্তর্জাতিক চাপ আমাদের জন্য কিছু না। কোনো দিক থেকে কোনো চাপ না।”

তিনি বলেন, “সবাইকেই দেখাতে চাই। আমাদের দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বকে দেখাতে চায়। আন্তর্জাতিক বিশ্বের কথাটা আমাদের মাথায় রাখতেই হবে। কারণ আমরা গোটা বিশ্বের একটা অংশ। আমরা মনে করি আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব একটা ভালো নির্বাচন করা।”

আগামী ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট। দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে এবার ১,৯৪০ জনের বেশি প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ অংশ নিচ্ছে ২৭টি দল। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ভোট বর্জন করেছে।

এবার ৩০০ সংসদীয় আসনে ভোটার রয়েছে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৯৩৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৭২০ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৯ জন। আর হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৪৮ জন।

বিএনপি,নির্বাচন,নির্বাচন কমিশন,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close