• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

স্থানীয় সরকার নির্বাচন

বিএনপির ‘আগ্রহী’ তৃণমূল কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে

প্রকাশ:  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাস্তবতা বিবেচনায় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী ও নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখতে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী বিএনপির তৃণমূলের একটি অংশ। এ বিষয়ে দলের হাইকমান্ডকে তাগাদাও দিচ্ছেন তারা। এর মধ্যে অতীতে দলীয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে ভোট করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন। তাদের যুক্তি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিলে সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। নেতাকর্মীদের মাঝেও উদ্দীপনা দেখা দেয়। এতে সংগঠন শক্তিশালী করার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তা ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বলেও তাদের ধারণা। এ অবস্থায় ভোটের মাঠে সক্রিয় হতে কেন্দ্রের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

যদিও এখন পর্যন্ত উপজেলাসহ স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অনড় বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। বর্তমান সরকারের অধীনে সবরকম নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা থাকায় এই নিয়ে নতুন করে আলোচনারও প্রয়োজন মনে করছেন না তারা। তবে নেতাকর্মীদের কেউ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে গেলে এবার কোনো ধরনের ব্যবস্থা নাও নেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে দলে দুই ধরনের মত রয়েছে। রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত থাকলেও নির্বাচনে গিয়ে কোনো অর্জন হবে না—এমন মতও এসেছে। তবে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে অংশ না নিলেও কেউ ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থী হলে দল তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নাও নিতে পারে।

নিলে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাদের মতে, আন্দোলন ঠেকাতে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে তৃণমূলে বিএনপি অনেকটা পর্যুদস্ত। এই অবস্থা থেকে দলকে ফের চাঙ্গা করতে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কারণ, এবার একেকটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের কয়েকজন করে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে (আওয়ামী লীগ ও দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী) যে বিভক্তি ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, তা সহসাই মিটবে না। নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপির প্রার্থীরা একটা সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করতে পারবেন। ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হবেন। তা ছাড়া অতীতে যারা উপজেলা চেয়ারম্যান বা মেয়র হয়েছেন, তারা এক দিনেই এমন অবস্থানে আসেননি। এলাকায় নিজের ও দলের ভিত্তি গড়ে তুলেই জনগণের সমর্থন পেয়েছেন। সেই ভিত্তি ধরে রাখতে হলেও নির্বাচনে যাওয়া দরকার।

তারা বলছেন, সিলেট বিএনপি নেতা আরিফুল হক ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে শুরু করে পরে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু উপজেলা নির্বাচন থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। এতে জাতীয়ভাবে সরকারের পরিবর্তন না হলেও সাংগঠনিকভাবে বিএনপি লাভবান হয়েছে। স্থানীয়ভাবে নেতাকর্মীরা সক্রিয় ও চাঙ্গা হয়েছেন। স্থানীয়ভাবে নির্বাচনে দলীয় বিবেচনা ছাড়াও আত্মীয়তা ও এলাকাভিত্তিক বিবেচনাও কাজ করে। নির্বাচন না করলে এসব ক্ষেত্রেও বিচ্ছিন্নতা তৈরি হতে পারে।

বিএনপির জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে কথা বললেও দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি। ময়মনসিংহ বিভাগের একটি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কালবেলাকে বলেন, ‘বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক ও নির্বাচমুখী রাজনৈতিক দল। নির্বাচনে গেলে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ সঞ্চার হয়। উদ্দীপনা কাজ করে। সবার মাঝে ঐক্য তৈরি হয়। এ কারণে সংগঠনের স্বার্থেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। তবে নির্বাচন বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নেবেন, নেতাকর্মীরা সেটাই অনুসরণ করবে।’

তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নে নতুন কিছু ভাবার অবকাশ নেই বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন কখনোই শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু হবে না। সুতরাং তার অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আমাদের আগ্রহ নেই। এই নিয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

বিএনপি,তৃণমূল কেন্দ্র,রাজনীতি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close