• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা জরুরি’

প্রকাশ:  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০৫ | আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘আজকের শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। শিশুদের যথাযথ শিক্ষার মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে ভবিষ্যতে তাদের পরিবার, সমাজ সর্বোপরি রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই শিশুকল্যাণের লক্ষে সরকারের মহাপরিকল্পনা ও এসডিজি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে এখনই সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা একান্ত জরুরি।’

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ সমাজসেবা অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের যৌথ উদ্যোগে এবং ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ‘সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণে করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারপারসন মো. মাহবুবুল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল এবং ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার ইমাম মাহমুদ রিয়াদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. খায়রুল আলম শেখ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত শিশুদের নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়াও, ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে যুক্ত শিশুরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ লক্ষে শিশুশ্রম থেকে শিশুদের বিরত রাখতে সরকার ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০’ প্রণয়ন করেছে। এই নীতি বাস্তবায়নে জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২৫) গ্রহণ করেছে। আর এই পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন করা একান্তই জরুরি।

আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের একটি অংশ রাস্তায় বসবাস করে। এ ছাড়া, তাদের একটি অংশ সুষ্ঠু তত্ত্বাবধানের অভাবে মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়ে ও নানারকম অপরাধ কর্মকাণ্ডে জরিয়ে পড়ে; যা সমাজের জন্য এক ধরনের হুমকিস্বরূপ। তাই, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধনে এই শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা একান্ত প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনীয়তা মেটাতেই আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা। ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার ইমাম মাহমুদ রিয়াদ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের সাথে শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা সম্পর্কে ধারণা প্রদান, সেল্টার হোম বা ড্রপ-ইন সেন্টারে শিশু সেবা প্রদান করা, কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি; শিশুর শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্বুদ্ধকরণ, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম থেকে শিশুদের প্রত্যাহার করে পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি ও শোভন কাজের সাথে যুক্ত করা, কিশোর-কিশোরীদের মাঝে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, স্পন্সরশীপের মাধ্যমে এতিম ও অসহায় শিশুদের শিক্ষা প্রদান করা; গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং শিশুদের খেলাধুলা, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কাজে উৎসাহ করা অতীব জরুরি। এ লক্ষে আমাদের সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করে যেতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারপারসন মো. মাহবুবুল হক বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর উন্নয়নের ধারাকে সচল রাখতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সমাজের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসেন। তিনি সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘একটি শিশুও পথে থাকবে না।’ সুতরাং, সরকারের কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে সব পর্যায় থেকে সমন্বয় করে কাজ করে যেতে হবে। তাহলেই আমরা আগামী দিনের জন্য সুনাগরিক গড়ে তুলতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে।

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, সরকারের ব্যাপক কর্মসূচির ছাড়াও উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠন শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের উন্নয়নে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে খুব সহজেই এসব কাজের সমন্বয় সাধন করা যায়।

শিশু
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close