• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

আবারও ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির ঘোষণা খলিলের

প্রকাশ:  ২৪ মার্চ ২০২৪, ১৮:০৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান তার দোকানে আবারও মাংসের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন থেকে তার দোকানে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হবে ৫৯৫ টাকায়। তবে আপাতত ২০ রোজা পর্যন্ত এই দামে মাংস বিক্রি করবেন তিনি।

রবিবার (২৪ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

গত বছর বাজারের তুলনায় কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করে আলোচনায় আসেন উত্তর শাহজাহানপুরের ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। এ বছর রমজানের শুরুতে ঘোষণা দেন, ২৫ রোজা পর্যন্ত তার দোকানে ৫৯৫ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করবেন। এতে তার দোকান “খলিল গোস্ত বিতানে” ক্রেতাদের ঢল নামে।

তবে, ২৫ রোজার কথা বললেও ১০ রোজা শেষ হওয়ার আগেই গত বৃহস্পতিবার কেজিপ্রতি মাংসের দাম ১০০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেন। সেই সময় তিনি দাম বাড়ানোর পেছনে “নানামুখী চাপে” আছেন বলে দাবি করেন।

তবে, রবিবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আয়োজিত “ব্যক্তিপর্যায়ে সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ফের ৫৯৫ টাকায় মাংস বিক্রির ঘোষণা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমান বলেন, “আগামী ২০ রোজা পর্যন্ত ৫৯৫ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করব। তবে প্রতিদিন ২০টির বেশি গরু জবাই দেব না। সকাল সাতটা থেকে শুরু করে বেলা তিনটা পর্যন্ত মাংস বিক্রি করা হবে। এরপর দোকান বন্ধ হয়ে যাবে।”

তিনি আওর বলেন, “আমি কথা দিয়েছিলাম রোজায় ৫৯৫ টাকায় মাংস বিক্রি করব। পরে গরুর দাম বেশি পড়ায় আমিও মাংসের দাম বাড়িয়েছিলাম, তাতে নানা প্রতিক্রিয়া এসেছে। এখন আগের কথায় ফিরে গেলাম। ২০ রোজা পর্যন্ত আগের দামেই মাংস বিক্রি করব।”

সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমানের পাশাপাশি মিরপুরের মোহাম্মদ উজ্জ্বল ও পুরোনো ঢাকার নয়ন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। তারাও সরকারি মূল্যের চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেন। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর গরুর মাংসের “যৌক্তিক মূল্য” নির্ধারণ করেছে প্রতিকেজি ৬৬৪ টাকা।

মোহাম্মদ উজ্জ্বল বলেন, “রমজানের মধ্যে ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এখন গরুর দাম বেশি পড়ছে। ফলে কেজিতে ৩৫ টাকা বৃদ্ধি করতে হয়েছে। তবে রমজানের বাকি দিনগুলো ৬৩০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করব। সরকারি দামের চেয়ে এখনো দাম কম আছে। আশা করি আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।”

নয়ন আহমেদ জানান, তিনি প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করেন ৫৭০ টাকায়। আর বাছাই করা মাংসের দাম পড়ে ৬৫০ টাকা।

তিনি বলেন, “বাজারে অনেক ব্যবসায়ী বেশি দাম গরু কিনছেন। ফলে আমাকেও বাড়তি দামে গরু কিনতে হচ্ছে। তাই এই দামের মধ্যে মাংস বিক্রি করা চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। তারপরও রমজান মাসে এই দাম অব্যাহত থাকবে।”

সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের কারণ সম্পর্কে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, “আমরা গরুর মাংসের বিক্রেতাদের ব্যবসার প্রচারণার জন্য ডেকে আনিনি, কিংবা তাদের সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্য চাপও দেওয়া হয়নি। এই ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের বাজারে বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। তবে এখন নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাদের কথা শুনতে চেয়েছি। মাংসের দাম তারা নিজেরাই নির্ধারণ করবেন। ব্যবসা তাদের, লাভ লোকসানও তাদের।”

প্রসঙ্গত, বাজারে যখন ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছিল, তখন খলিলুর রহমান ৫৯৫ টাকায় মাংস বিক্রির ঘোষণা দেন। এরপর ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ তার দোকানে মাংস কিনতে ভিড় করে। গত শুক্রবার তিনি এক কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন বলে জানিয়েছিলেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সম্প্রতি বিশ্ব ভোক্তা দিবসের অনুষ্ঠানে এই ব্যবসায়ীকে “ব্যবসায় উত্তম চর্চার স্বীকৃতি” দিয়ে পুরস্কৃত করেছে।

পুরস্কৃত,জাতীয় ভোক্তা অধিকার,বিশ্ব ভোক্তা দিবস
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close