• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বাদামতলা চত্বর যেনো গণ'র 'টিএসসি'

প্রকাশ:  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:৩৮
সানজিদা জান্নাত পিংকি
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদামতলা

প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় রূপ নেয় টিএসসি। ক্যাম্পাস ভেদে টিএসসিরো থাকে নানা রূপ। তেমনই সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'টিএসসির' মতো ভূমিকা রাখে বাদামতলা। প্রতিদিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাস জুড়ে শুরু হয় গমগমে পরিবেশ। ক্লাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের জুবুথুবু পাঠ নেয়া আর শিক্ষকদের মনোযোগ শিক্ষাদান। তবে এই গম্ভীর পরিবেশ অনেকটাই যেনো হালকা হয়ে যায় বাদামতলায় এসে!

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতেই সারি করা বসার বেঞ্চি। বেঞ্চিগুলোকে ছায়া দিয়ে রাখে ঝুপড়ির মতো বাদাম গাছ। এজন্যই কি না শিক্ষার্থীরা এই জায়গাটুকুর নাম দিয়েছেন 'বাদামতলা!"

সম্পর্কিত খবর

    ক্লাস শেষেই শিক্ষার্থীদের ঢল ছুটে সেই বাদামতলার দিকে। একেক বেঞ্চিতে একেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের বন্ধুদের মধ্যে দখল। তারপর মশগুল আড্ডা।

    সেই আড্ডায় দেখতে পাওয়া হাসাহাসি, গুরুগম্ভীর, পড়াশোনা, রাজনীতি, ঘরকনে, লাজুক কিংবা চঞ্চল সব তরুণ-তরুণীদের। যেনো সবে মিলে এক প্রাণ হওয়ার চত্বর এটি!

    শিক্ষকরা জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে গাছগুলো রোপন করা হয়েছিলো। সেই গাছ এখন ছাতার মতো ছায়া দেয় সবাইকে। মাঠ জুড়ে রোদ থাকায় শিক্ষার্থীরা সে মুখো হয় কদাচিৎ! এরচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় 'বাদামতলাই'।

    যেমনটা বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও পরবর্তীতে শিক্ষক লিমন হোসেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। বাদাম গাছ তখন বড়, তবে বেঞ্চি ছিলো না। পরে শিক্ষার্থীদের দাবিতে বাদামতলা ও মাঠে বেঞ্চি করে দেয়া হয়। তবে মাঠের চেয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বাদামতলাই বেশি পছন্দের জায়গা হয়ে ওঠে।

    তিনি বলেন, আমরা যখন ভর্তি হই। তখন প্রথম থেকে ৮ম সেমিস্টার সবার সঙ্গে আন্ত: সম্পর্ক ছিলো না। বাদামতলা সেখানে অনুঘটকের কাজ করেছে। আমরা দেখি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি আছে বা আড্ডার জায়গা আছে। তবে আমাদের এখানে সেভাবে কোন মিলনায়তন গড়ে উঠেনি। একারণে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মধ্যে আত্মিক সম্পর্কটাও গড়ে ওঠেনি। তবে বাদামতলা হওয়ার পর সবাইকে এক করতে ভূমিকা রেখেছে।

    কথা হয় বাদামতলায় আড্ডারত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারাও বললেন একই কথা। লাকী আক্তার, তারেক হোসেন ও তানজিলা রহমান নামে ওই শিক্ষার্থীরা বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে দারুণ জায়গা এই বাদামতলা। অনেকটা আমাদের 'টিএসসি' এটা। ক্লাসের বাইরে এই ছায়াঘেরা জায়গাটিতে আড্ডা দিয়েই সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।

    বাদামতলার উন্নয়নের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, সবার আড্ডা দেয়ার এই জায়গাটার আরো উন্নয়ন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে জায়গাটিতে পানি জমে কাঁদা হয়ে যায়। যদি ইটের সলিং বা ঢালাই করে দেয়া হয় তাহলে সুবিধা হবে।

    স্মৃতিচারণ করে শিক্ষক লিমন হোসেন বলেন, শিক্ষক হওয়ার পরে যেসব কিছু মিস করি তার অন্যতম একটি এই বাদামতলা। আগে ক্লাস শেষেই বাদামতলা চলে যেতাম। এখন সুযোগ হয় না আবার শিক্ষক হওয়ায় যেতেও পারি না।

    লেখক: শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

    পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close