• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পক্ষপাত এবং চাটুকারিতায় অভিভাবকহীন সাংবাদিকতা

প্রকাশ:  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৭
সৈয়দ বোরহান কবীর

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবছরের জন্য একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করেছে। এবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য একুশ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সাংবাদিকতার জন্য এবার কেউ একুশে পদকের জন্য মনোনীত হননি। তালিকা খুঁজে সাংবাদিকতা ক্যাটাগরি খুঁজে না পেয়ে খুবই দু:খিত এবং ব্যথিত হলাম। এবারই প্রথম যে সাংবাদিকতায় একুশে পদক দেয়া হয়নি, তা নয়। এর আগেও বেশ ক’বার এই ক্যাটাগরিতে কাউকে যোগ্য বিবেচনা করা হয়নি। একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পদক নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। অনেক অযোগ্য ব্যক্তি অলৌকিক তদ্বিরে এসব রাষ্ট্রীয় পদক বাগিয়ে নিয়েছেন। এবারও যারা পদক পেয়েছেন তারা সবাই যে যোগ্য এবং তাদের কর্মক্ষেত্রে অনুকরণীয় এমনটি বলা যাবে না। দেশে এতো টেলিভিশন, এতো পত্রিকা, এতো অনলাইন, এতো কিছুর মধ্যে একজন অভিভাবক নেই। একজন গ্রহণযোগ্য সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব নেই, যিনি একুশে পদক পেতে পারেন? নাকি চাটুকার, মতলববাজ তথাকথিত সাংবাদিকদের ভিড়ে সরকার ভুলেই গেছে, সাংবাদিকতা বলে কোন পেশার কথা।

আশির দশকে আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই সাংবাদিকতার নেশায় আসক্ত হয়েছি, তখন এই পেশায় সর্বজন শ্রদ্বেয় অনেক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। পেশাদারিত্বে তারা ছিলেন অতুলনীয়। লেখাপড়ায় অনেকেই পন্ডিত তুল্য। আতাউস সামাদ, ফয়েজ আহমেদ, বজলুর রহমান, সন্তোষ গুপ্ত এরকম অনেকেই। তাদের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা ছিলো। কিন্তু সাংবাদিকতার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তাদের অবস্থান ছিলো অভিন্ন। অন্ধ দলকানা কিংবা পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে তারা এই পেশাকে কুলষিত করেননি। এখন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা মোটা দাগে কর্পোরেট দাসত্ব। বড় বড় সব সংবাদ মাধ্যম শিল্পগোষ্ঠীদের মালিকানায়। এই সব বড় বড় কর্পোরেট হাউসের বিভিন্ন পত্রিকা এবং টেলিভিশনে যারা সাংবাদিকতা করেন, তারা আসলে সাংবাদিক নন ক্রীতদাস। শিল্প গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ, তাদের পক্ষে ওকালতি, তাদের বিরুদ্ধে পক্ষের বিরুদ্ধে ফরমায়েসী সংবাদ পরিবেশনই এখন বাংলাদেশের সাংবাদিকতার একটি অন্যতম প্রধান ধারা। মালিক মহাশয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে। সম্পাদক থেকে শুরু করে চুনোপুটি রিপোর্টারের ঘুম হারাম। পত্রিকা এবং টেলিভিশন জুড়ে তারই বন্দনা। একটি ব্যবসা বাগাতে হবে, মন্ত্রী কিংবা সচিব সহযোগিতা করছে না, চিন্তা কি দাও নিউজ করে। ব্যস মন্ত্রী, সচিব, প্রকল্প পরিচালক সুড়সুড় করে ঐ প্রতিষ্ঠানের বশ্যতা স্বীকার করবেন। পত্রিকা, টেলিভিশন না থাকলে আজকাল বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীরা নিরাপদ নন, এমন একটি ধারণা প্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন অনেক গণমাধ্যম কর্পোরেট গোষ্ঠীর ঢাল। মহান সম্পাদক গণ এখন সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতি, সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার চেয়ে মালিক তুষ্টির চেতনায় উজ্জীবিত। গণমাধ্যমের মালিকানাই এখন মুক্ত সাংবাদিকতার অন্যতম প্রধান শত্রু। রাজনীতিবিদ থেকে আমলা সবাই জানেন গণমাধ্যমের লাটাই কার হাতে। সম্পাদক বা বার্তা সম্পাদকের চেয়ে এখন পত্রিকার মালিকরাই তাদের কাছে গুরুত্বপুর্ণ। এখন সংবাদকর্মীদের মানসিকতাতেও এসেছে পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের দুটি দিক আছে। অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক। একথা অস্বীকার করার কোন কারণ নেই, এখন বহু মেধাবী তরুণ পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নিচ্ছেন। এই পেশাটি কোন ভাবেই আগের মতো অনিশ্চয়তায় ভরা বিবর্ণ নয়। ভেঙ্গে ভেঙ্গে বেতন, বেতন পাওয়ার অনিশ্চয়তার দিন এখন আর নেই। একটা সময় ছিলো যখন সাংবাদিক নাম শুনলে বাড়িওয়ালারা বাড়ি ভাড়া দিতেন না। বাম কমরেডদের একটা পেশাগত পরিচয় প্রয়োজন হয়, এজন্য অনেকে বেছে নিতেন সাংবাদিকতা। চাকরি না পেয়ে বেকারত্ব ঘোচানোর সাইনবোর্ডও ছিলো এই পেশা। এখন সংবাদপত্রে ওয়েজ বোর্ড আছে। কয়েকটি সংবাদপত্র ওয়েজ বোর্ডের চেয়েও বেশি বেতন দেয়। টেলিভিশন সাংবাদিকতার বেতন ঈষনীয়। তরুণরা এখানে সহজেই নিজেদের ক্যারিয়ার গুছিয়ে নেয়। অন্য পেশায় যেমন উপরি আছে, সাংবাদিকতায় সেরকম উপরি কম নয়। ভালো যোগাযোগে আয় উপার্জনের বড় বাড়ন্ত ঘটে। গাড়ী বাড়ি হয়ে যায় সহজেই। ক্ষমতা, বিদেশ ভ্রমন, ইত্যাদি নানা সুযোগ সুবিধা সাংবাদিকতায় বেড়েই চলেছে। কিন্তু এসব প্রাপ্তি শর্তহীন নয়। সুখী স্বাচ্ছন্দ্য জীবনের জন্য তাকে ওপর মহলের অনুগত, বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন হতে হয়। এজন্য অনেক ‘রেডিমেড নিউজ’ তাকে লিখতে বা বলতে হয়। এসব না করেও নিয়মিত ওপর মহলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে এমনিতেই অনেক প্রাপ্তি যোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে বাংলাদেশে ‘বন্ধুহীন সাংবাদিকতার’ দিন শেষ হয়ে গেছে।

রাজনৈতিক দিক হলো, সাংবাদিকতার পেশা এবং ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আদর্শ এখন একাকার। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে, যে সাংবাদিক যে রাজনৈতিক দলের নিউজ কাভার করেন, তিনি তাদের লোক হয়ে যান। আওয়ামী লীগের সংবাদ সংগ্রহ করা সাংবাদিক অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে যান আওয়ামী লীগের কর্মী। আবার বিএনপির জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত সংবাদ কর্মীরা বিএনপির নেতার চেয়েও বড় নেতার মতো আচরণ করেন। সাংবাদিক সংগঠন গুলো আওয়ামী পন্থী এবং বিএনপি পন্থী। রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীদের মতোই তাদের আচার আচরণ। আওয়ামী পন্থী সাংবাদিকরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোন দোষত্রুটি খুঁজে পান না। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রশ্ন করেন না, চাটুকারিতার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। অন্যদিকে বিএনপি পন্থী সাংবাদিকরা সরকার এবং আওয়ামী লীগের কোন ভালো কাজ দেখেন না। তাদের কাজ হলো সারাদিন সরকারের সমালোচনা করা। এরা বিএনপির কোন ব্যর্থতা দেখেন না। বিএনপির কোন সমালোচনা শুনতে রাজী নন। এরা আশায় বুক বেঁধে থাকেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে কে কি পাবেন বা দখল করবেন, তার হিসেব কষে পুলকিত হন।

বাংলাদেশে সাংবাদিকতার একটি বড় অংশ দলকানা। পেশাগত মর্যাদা, সম্মান এসব নিয়ে তারা ভাবেন না। সাংবাদিকতার এই অতি রাজনীতির জন্য সাংবাদিক সংগঠন গুলোর নেতৃত্ব প্রায় দখল করে দিয়েছেন অসাংবাদিকরা। জীবনে এক কলম লেখেননি, সাংবাদিকতায় ন্যূনতম অবদানহীন ব্যক্তিরা ইউনিয়নের নেতা। একজন সাংবাদিক নেতার পেশাগত দক্ষতা দেখা হয় না, মূল দলের সঙ্গে তার নৈকট্য এবং ঘনিষ্ঠতাকে বিবেচনা করা হয়। এর বাইরে সাংবাদিকতার একটা ধারা তৈরী হয়েছে। ‘সুশীল ধারা’। একটি বৃহৎ শিল্প পরিবার বাংলাদেশের সংবাদপত্র জগতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্র প্রকাশ করে। বাংলা এবং ইংরেজী ভাষায় এই দুটি পত্রিকাই বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রভাবশালী। এই মিডিয়া হাউস বাংলাদেশে সংবাদপত্রে এলিট সাংবাদিকতা প্রবর্তন করেছে। এই গোষ্ঠীর সাংবাদিকরা নিজেদের ‘ব্রাহ্মন’ মনে করেন। অন্য সংবাদপত্র গুলোকে এরা নিম্নমানের এবং নিম্নরুচির মনে করে এড়িয়ে যান। এই দুই সংবাদপত্র মনে করে তারা যা লেখে সেটাই একমাত্র সঠিক। তাড়া ছাড়া রাজনীতিবিদ, আমলা, সাংবাদিক সবাই মূর্খ। এদের নিজস্ব বলয় আছে। খামারে যেমন হাঁস, মুরগী, গরু ছাগল লালন পালন করা হয়, তেমনি এরাও গৃহপালিত বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ এমনকি আমলা লালন পালন করেন। এই মিডিয়া হাউসে উৎপাদিত, নিজস্ব খামারে লালিত-পালিত বুদ্ধিজীবীরা শুধু এই দুই পত্রিকায় লেখেন। শোবিজের নিজস্ব খামারে পালিত তারকাদের নিয়ে এরা প্রতি বছর উৎসবের আয়োজন করে। এই উৎসবে তাদের সবচেয়ে অনুগত স্তাবকদের বিভিন্ন পুরুস্কার বিলি বণ্টন করা হয়। আনুগত্যই পুরুস্কার প্রাপ্তির একমাত্র উপায়। বছর জুড়ে নানা কসরত করে এরা অনুগত তারকাদের প্রশস্তি গায় এবং তারকা বানায়। এরা সারাক্ষণ মানবাধিকার, আইনের শাসন ইত্যাদি ফেরী করে। কিন্তু নিজেদের আইন ও বিচারের উর্ধ্বে মনে করে। এই হাউসের পত্রিকায় মহানবী (সা:) কে ব্যঙ্গ করা হলেও তারা ক্ষমা পান। সচিবালয় থেকে ফাইল চুরির অপরাধে এদের সাংবাদিকরা ধরা পড়লে তার বিচার করলেও, তা নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়। ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা গেল’ এই বলে তাদের গৃহপালিতরা একযোগে আর্তনাদ শুরু করে। এদের গৃহপালিত বুদ্ধিজীবীরা গণমাধ্যমের অধিকার নিয়ে মাতম তোলে। অনুষ্ঠানের নামে শিশু হত্যা করলেও এদের বিচার করা মানবাধিকার লঙ্ঘন। হত্যা মামলার আসামী হয়েও এরা দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। আইন তাদের জন্য নয়। এদের নীতি নির্ধারকরা বাড়িতে থাকা গৃহকর্মীদের যৌন নিপীড়ন করেন। অসহায় গৃহকর্মীকে হত্যাও এই গোষ্ঠীর জন্য জায়েজ। হত্যা মামলার আসামী হয়েও এর দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। আইন তাদের জন্য নয়। রাষ্ট্রের চেয়েও এরা নিজেদের ক্ষমতাবান মনে করে। সরকার ফেলে দেয়ার জন্য এদের সম্পাদকরা কৌশল ঠিক করেন। মাইনাস ফর্মুলা আবিস্কার করেন। যখন যার চরিত্রহনন, যাকে ইচ্ছা তাকে আক্রমণ করে এরা প্রমাণ করে, যে তারা কত ক্ষমতাবান। সরকারও তাদের ভয়ে রীতিমতো কাঁপে। এরা একদিকে মাদক বিরোধিতার কথা বলে, আবার সুশীলদের নিয়ে এদের মদের আড্ডার গল্প অভিজাত এলাকায় সৌরভ ছড়ায়। এরাই তাদের ওটিটি প্লাটফরমে মাদকের উৎসাহ দাতা। এরা অপ সাংবাদিকতা নিয়ে জ্ঞান দেয়, আবার এরাই গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য যাচাই বাছাই না করেই নির্দোষ, সৎ রাজনীতিবিদকে চাঁদাবাজ বানায়। রান্নার রেসিপি, নারীর যৌন উত্তেজক ছবি দিয়ে এরা কাটতি বাড়ায়। কিন্তু এদের আসল লক্ষ্য রাজনীতি ধ্বংস করা, অর্থনীতিকে পঙ্গু করা, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো। এদের একজন ‘ধনীক গোষ্ঠীর লুটপাটের কাহিনী’ লিখে বড় লোকদের ব্লাকমেইল করে। বড় লোকদের লুটের টাকায় সংবাদপত্র তৈরী করে তারাই আবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। অদ্ভুত বৈপরীত্যে ভরা এই সংবাদপত্র গোষ্ঠী সাংবাদিকতা পেশাকে এক বিরাজনীতিকরণ মিশনে পরিণত করেছে। ফলে দেশে এখন সাংবাদিকতা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, কর্পোরেট এবং সুশীল গোষ্ঠীর হাতে জিম্মী। দেশে সাংবাদিকতা কোথায়? সাধারণ মানুষ জানে কোন সংবাদপত্র বা টেলিভিশন কোন মতলবে কোন সংবাদ প্রচার করছে। খুব কম সংখ্যক মানুষই আছেন যারা সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের সব খবর বিশ্বাস করেন। সংবাদপত্র পাঠ যাদের অভ্যেস তারা সত্যের সন্ধানে একাধিক সংবাদপত্র পড়েন। টেলিভিশনের দর্শকরাও চ্যানেল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সত্যের সন্ধান করেন। সংবাদপত্র শুধু ব্যবসা না সাংবাদিকতাও এখন ব্যবসা। সরকার সাংবাদিকতার এই অবস্থা বুঝেই কি এবার সাংবাদিকদের একুশে পদক দিলো না?

সাংবাদিকরা এখন একটি অসাধারণ রিপোর্ট করতে চান না। নিজের ভাগ্য গড়তে চান। সাংবাদিকরা যারা সরকার ঘনিষ্ঠ কেউ ব্যবসা চান, কেউ পাওয়ার প্লান্ট চান, কেউ ব্যাংক চান, কেউ চান টেলিভিশন। ছোট খাটো চাহিদা যাদের তারা বিদেশে পোষ্টিং চান, রাজউকের প্লট চান, বিভিন্ন কমিটিতে থাকতে চান, ব্যাংকের পরিচালক হতে চান। ফলে সাংবাদিকতা জগতে একনিষ্ট নিবেদিত প্রাণ সংবাদকর্মী কি আদৌ আছে? তাই একদিক থেকে এবার সাংবাদিকতায় একুশে পদক কাউকে না দেয়ার সিদ্ধান্ত একেবারে খারাপ না। এটা সাংবাদিকতার জন্য একটি বার্তাও বটে। তবে এই সিদ্ধান্তের আরেকটি দিক আছে। অতীতে মাছ-মুরগীর চাষ সম্পর্কে অনুষ্ঠান করা ব্যক্তিও সাংবাদিকতায় একুশে পদ পেয়েছেন। সারাজীবন পিঠার হোটেল চালিয়ে আর ব্যবসা করে তিনি সাংবাদিকতার জন্য স্বাধীনতা পদক পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। অতীতে একুশে পদক প্রাপ্তদের তালিকা খুঁজলে দেখা যাবে সাংবাদিকতায় কোন অবদান না রাখা বিতর্কিত ব্যক্তিদের হাতে এই পুরুস্কার তুলে দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের পদলেহী চাটুকার সাংবাদিকরা এই পদক পেয়েছেন। এবার তা করা হয়নি। সরকারের পক্ষে চাটুকারিতা করে যারা ফেনা তোলেন তাদের কাউকেই পুরস্কার দেয়া হলো না কেন? সাংবাদিকরা কি চাটুকারিতার দৌড়েও পিছিয়ে পরলেন? নাকি সরকার কি মনে করছে, সাংবাদিকতা কিংবা গণমাধ্যম এখন একেবারে গুরুত্বহীন, অপ্রয়োজনীয়?

(হলফ নামা: আমি কোন সরকারের আমলেই রাষ্ট্রীয় কোন পদকের জন্য আবেদন করিনিকোন সরকারের কাছ থেকে ব্যাংক, টেলিভিশন, পাওয়ার প্লান্ট বা অন্য কিছু প্রাপ্তির জন্য আবেদন করিনিআমি কোন সরকারের আমলেই রাষ্ট্রীয় খরচে কোন সরকার প্রধানের সফর সঙ্গী হইনিকোন সরকারের আমলে কোন সরকারি কমিটিতে যোগ দেই নিদেশে বিদেশে কোন চুক্তি ভিত্তিক সরকারি চাকরী গ্রহণ করিনিকোন ব্যাংকের পরিচালক কিংবা কোন উৎসব কমিটির আহ্বায়ক বা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করিনি।)

সৈয়দ বোরহান কবীর, নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

ই-মেইল: [email protected]

সৈয়দ বোরহান কবীর
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close