• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

সংলাপে যাবে না ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ:  ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

তিনি বলেন, সরকারের চেয়ে রাষ্ট্র অনেক বড় ধারণা। সরকার দলের হয় আর রাষ্ট্র হয় সবার। সেই রাষ্ট্রের প্রধান যখন কোনো সংলাপের আমন্ত্রণ জানান, তখন তাতে সাড়া দেওয়া নাগরিক দায়িত্ববোধের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। এ বোধ থেকেই আমরা ২০১২ ও ২০১৭ সালের সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু তিক্ত সত্য হলো, আমরা চরমভাবে হতাশ হয়েছি।

তিনি বলেন, ২০১২ সালের সংলাপে গঠিত নির্বাচন কমিশন ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে একতরফা নির্বাচন আয়োজন করেছে; যেখানে ১৫৩ জন সংসদ সদস্যকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী দেখানো হয়। ২০১৭ সালের সংলাপের পর গঠিত কমিশন ২০১৮ সালে একটি বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছে, যাকে অনেকেই মধ্যরাতের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করে। এই দুই জাতীয় নির্বাচন এতটাই বিতর্কিত ও জালিয়াতিতে পূর্ণ যে, তা জাতি হিসেবে আমাদের চরম হতাশ, বিব্রত ও লজ্জিত করেছে।

‘এমন কলঙ্কজনক নির্বাচনের জন্য ইসিকে জবাবদিহিতার আওতায় না আনায় তারা হতাশ’ উল্লেখ করে চরমোনাই পীর বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি কোনো রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেননি। তাছাড়া অতীতের দুটি সংলাপে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের গঠনমূলক প্রস্তাবগুলোর কোনোটাই মূল্যায়ন করা হয়নি। যে দল তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচন করেছে, তিনি সেই দলীয় স্বার্থের বাইরে যেতে পারেননি। অতীতের দুটি সংলাপ যেমন জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, চলমান সংলাপেও এর ব্যতিক্রম কিছু হবে না।’

‘এই পরিপ্রেক্ষিতে জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে এমন আবেদনহীন ও তাৎপর্যহীন সংলাপে অংশ নেওয়া সঙ্গত মনে করছে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ যোগ করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জনের ঘোষণা দিয়ে তারা সাত দফা দাবি জানান। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, বর্তমান সংসদের বাইরে কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করা, নির্বাচনে অসততা, অদক্ষতা ও পক্ষপাত পাওয়া গেলে ইসির সদস্যদের অপসারণের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়।

এছাড়া নির্বাচনকালে ইসির দায়িত্বে জনপ্রশাসন, আইন, স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে ন্যস্ত করা, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দলীয় লেজুড়বৃত্তি করতে দেখলে তাদের স্থায়ীভাবে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ নির্বাচনী সহিংসতার বিচার নিশ্চিতের দায়িত্ব ইসিকে নিতে হবে বলে জানানো হয়।

এর আগে সংলাপে না যাওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণফোরামের একাংশ। আগামী ৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সংলাপে অংশ নিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

গত ২০ ডিসেম্বর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হয়।

পূর্বপশ্চিমবিডি/অ-ভি

নির্বাচন কমিশন,সংলাপ,রাষ্ট্রপতি,মো. আবদুল হামিদ,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close