র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কি অযৌক্তিক, প্রশ্ন রিজভীর
‘আপনারা (সরকার) অত্যাচারের ভয় দেখিয়ে বিরোধীদল ও মতকে বন্ধ করতে পারেন, কিন্তু আমেরিকা, জার্মানি, বৃটেনের মুখ বন্ধ করবেন কীভাবে? তারা কি দেখে না? তারা সবই দেখছে। র্যাবের বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা কি অযৌক্তিক? তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।’
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
সম্পর্কিত খবর
তিনি বলেন, বিএনপির ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, জনি, সুমনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছেন। এগুলো কি আশেপাশের মানুষ দেখে না? দেশের মানুষকে রক্তচক্ষু দেখাতে পারেন, কিন্তু বিদেশিদের পারবেন না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশবাসী আজ দুঃসময়ের মধ্যে দিন যাপন করছে। যারা গণতন্ত্র মুক্তির জন্য লড়াই করছে তারা কেউ ভালো নেই। আজ বিশ্ব মহামারির চেয়ে জাতীয় মহামারিতে বেশি আক্রান্ত দেশ। পুরো দেশ আজ অত্যাচার-অনাচারে আক্রান্ত। জাতি আজ ভীতিকর অবস্থায় রয়েছে। পাক হানাদারদের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে জাতি অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার পরই দেশের মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় শাসকগোষ্ঠীর হাত। পরাধীন থাকাকালীন যেভাবে নিষ্পেষিত হয়েছিলো জনগণ, বর্তমানেও তার চেয়ে বেশি নিষ্পেষিত দেশ। বর্তমান সরকার বিরোধীদল ও মতকে ধ্বংস করার জন্য যে অত্যাচার-নিপীড়ন চালাচ্ছে তা ইয়াহিয়া ও টিক্কা খানকেও হার মানায়।
তিনি বলেন, বিরোধীদল আজ প্রতিবাদ করলে, কর্মসূচি দিলে গুম হতে হয়, বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। রেহাই পায় না মিডিয়া কর্মীরাও। তাদেরও বন্দি করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে লাশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী আরো বলেন, তিনি বললেন ‘আমেরিকায় প্রতিবছর ছয় লাখ লোক গুম হয়’। আপনার তথ্য দেখলে মনে হয় আপনি প্রাইমারিও পাস করেননি। দু’দিন পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবার বললেন ‘আমেরিকায় প্রতিবছর এক লাখ মানুষ গুম হয়’। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের পদ টিকিয়ে রাখতে মন্ত্রীরা একের পর মিথ্যা বলে যাচ্ছেন, ভিত্তিহীন তথ্য দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চান। ক্ষমতার ক্ষুধার জন্য মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। মন্ত্রীদের দিয়ে মিথ্যা বলানো হচ্ছে। গোটা দেশ আজ বন্দিশালা। বর্তমান সরকারের তথাকথিত উন্নয়ন ফ্লাইওভার, সেতু দেখছে আর বন্দিশালায় ছটফট করছে। কখন কাকে গুম করবে সেই ভয়ে সবসময় শঙ্কিত থাকে মানুষ। তথাকথিত উন্নয়নের কথা বলে মানুষকে ভুলানো যাবে না। এখন পিছুহ টার সুযোগ নেই। পিছু হটলে জাতি শত বছর পিছিয়ে পড়বে। এই সরকার জমিদারি শাসন কায়েম করতে চায়। গণতন্ত্র মুক্তির জন্য, নির্ভয়ে বসবাসের জন্য এই সরকারের পতন ঘটাতেই হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/অ-ভি