• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

নয়াপল্টনে আলোচনা সভায় ফখরুল

রিজার্ভ খালি, আইএমএফ’র ঋণ শোধ হবে কীভাবে

প্রকাশ:  ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৯:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইতোমধ্যে রিজার্ভ খালি হয়েছে, এ অবস্থায় আন্তজার্তিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে নতুন করে নেওয়া ঋণ কীভাবে শোধ হবে তা জানতে চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বুধবার (৯ নভেম্বর) জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অনেকের অনুমান ছিলো, আমরা আইএমএফের ঋণ পাবো না কিংবা তারা কঠিন শর্ত দেবে। তেমন কিছুই হয়নি। তবে তারা শর্ত দিয়েছে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য আইএমএফের কিছু পরামর্শ আছে। আমরাও সেভাবে কাজ করছি। ’

এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে। মানুষ কী করে বাঁচবে। এর কারণটা কি? একটা মাত্র কারণ- ক্ষমতায় আসার পরে তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে চুরি করা, দুর্নীতি করা। আইএমএফ’র ঋণ পেয়ে ডুগডুগি বাজাচ্ছেন। কদিন আগেও অর্থমন্ত্রী বলেছেন- ‘আইএমএফরে ঋণ আমাদের দরকার নাই’। তারা এখন তাদের ঋণ নিচ্ছে কেন? কারণ, এর মধ্যে চুরি করে কোষাগার সাফ করে ফেলেছেন। দেওলিয়া করে ফেলেছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা পাঁচার করেছেন। বিদ্যুতের নামে এমন পাচার করেছেন যে, এক বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরে অন্যতম বিলিয়নিয়ার হয়েছেন। দেশে রাখছে না টাকা। বিভিন্ন কায়দাকানুন করে সব বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই- এদেশের মানুষের এখন প্রয়োজন বেঁচে থাকার। আইএমএফ’র ঋণ নিয়েছেন ভালো কথা। ঋণ শোধ করবেন কীভাবে। ইতোমধ্যে রিজার্ভ খালি হয়েছে। শোধ করা অনেক কঠিন হবে। অন্যদিকে আপনারা সমস্ত টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আজ আপনারা কী খাতে খরচ করলেন, কেন খরচ করলেন তা জনগণকে জানান না। সুতরাং আইএমএফ’র ঋণ নিয়ে আপনারা জনগণকে আরো একটা ঋণের মধ্যে ফেলতে যাচ্ছেন- যা ইতোমধ্যে সমস্ত ঋণগুলো আপনারা করেছেন।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন বলছেন আপনারা মেগা প্রজেক্ট বন্ধ করছেন। আমরা বহু আগে বলেছিলাম। যখন করা হয় তখনই আমরা বলেছিলাম- মেগা প্রজেক্টগুলো বন্ধ করে দেন। সেই টাকা জনগণের স্বাস্থের জন্য, তাদের বেঁচে থাকার জন্য খরচ করুন। যখন লকডাউন দিয়েছিলেন জনগণের কী অবস্থা হয়েছিল, যারা হকার ছিলো তারা ব্যবসা করতে পারেনি, একমাস-দুমাস তারা কষ্ট করেছে।

তিনি ‘মায়ের কান্না’ নামের নতুন একটি সংগঠনের সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নেওয়ার দাবিকে নতুন ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নতুন সব ফন্দিফিকির বের করছেন আন্দোলনকে ডাইভার্ট করার জন্য। আমাদের যে গুম হওয়া পরিবারগুলো, তাদের একটা সংগঠন আছে ‘মায়ের ডাক’। ওটার পাল্টা একটা তৈরি করেছে ‘মায়ের কান্না’। এটা নতুন। পঁচাত্তর সালে সিপাহী জনতার বিপ্লব হয়েছিলো ৭ নভেম্বরে, সেই সময়ে কারা কারা নাকি মারা গিয়েছিলো, তাদের আত্মীয়স্বজনরা এতোদিন পর উদয় হয়েছেন। কী দাবি করছেন। শহীদ জিয়া নাকি মানুষদের হত্যা করেছেন। সেজন্য তার কবর সেখান থেকে সরিয়ে দিতে চায়।

নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, এটাকে হাল্কা করে নেবেন না। এটা অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত শুরু করেছে। এই চক্রান্ত হচ্ছে- আবারো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, মানুষের আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দেওয়ার। আমরা সেই সুযোগ দেবো না। আমাদের লক্ষ্য একটা- বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। এই জনগণকে রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে। ভাতের অধিকার, বস্ত্রের অধিকার, জীবনের অধিকার রক্ষা করতে হলে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে নতুন একটি সংসদ গঠন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা দেশে নতুন স্বপ্ন দেখাবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

শোধ,রিজার্ভ,ঋণ,আইএমএফ,বিএনপি,মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close