• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে নতুনত্বের খোঁজে: সম্ভাবনায় ঢাবির বাইরের নেতৃত্ব

প্রকাশ:  ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:৪৬ | আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:৫১
আরিফুল ইসলাম

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ৬ ডিসেম্বর। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে এরইমধ্যে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। নেতা হিসেবে নির্বাচিত হতে আওয়ামী লীগের নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের চলছে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ। তবে সবাই বলছেন, কমিটি চূড়ান্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।

সংগঠনের নতুন নেতৃত্বের জন্য মেধা ও যোগ্যতার বিবেচনা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এজন্য আসতে পারে নতুন চমক। কেমন হবে ছাত্রলীগের কমিটি। নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে কারা? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজেছে অনলাইন পূর্বপশ্চিম বিডি অনলাইন।

এতে জানা যায়, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে নতুনত্বের খোঁজ করা হচ্ছে। এবারের সম্মেলনে তাই আলোচিত হচ্ছে আগের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত কোথা থেকে আসবে নতুন নেতৃত্ব! কারণ টানা ১৬ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে দায়িত্বে এসেছেন। এ নিয়ে সংগঠনের মধ্যে খুব বেশি আলোচনা না থাকলেও অনেকেই চাইছেন নেতৃত্ব নির্বাচনে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে যোগ্যতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলীকে প্রাধান্য দেওয়া হোক।

ফলে প্রার্থিতার দৌড়ে এরইমধ্যে কাজ করে যাচ্ছেন ঢাবির বাইরের অনেক নেতাই।

এর মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক হামজা রহমান অন্তর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার জামিউস সানী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আল আমিন শেখ, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হৃদয় সাইদুর রহমান হৃদয়, চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ইমাম বাকের, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক তারেক আজীজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিউল ইসলাম ফুয়াদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূরুল আফসার ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ঢাকা কলেজের আতিক হাসান রাব্বির নাম আলোচনায় উঠে এসেছে।

নেতাকর্মীরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার কারণে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরেই অকেজো পড়ে আছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই সব ধরনের কর্মকাণ্ড করেন। দিবসভিত্তিক কর্মসূচি পালন করতেই কেবল কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যালয়ে যান।

এই ধারা ২০০৬ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান রিপন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার রোটনের সময় থেকে শুরু হয়, যা এখনও পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এনিয়ে নেতাকর্মীরও ক্ষোভ আছে।

তারা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে আসা অনেক নেতাই ছাত্রলীগকে সু-সংগঠিত করেছেন। এরমধ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ছিলেন বিএম কলেজের নেতা, সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা ছিলেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে ছিলেন; সাবেক সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ছিলেন মেডিক্যাল নেতা, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জিএসও ছিলেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীমও ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই ছাত্রলীগের নেতৃত্ব আসতে পারে। এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান, এমনকি মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান থেকেও আসতে পারে। যে যোগ্য, মেধাবী এবং সাহসী তাকে নির্বাচিত করা হয়। যোগ্যতাই এখানে সবচেয়ে বড় মাপকাঠি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, ক্লিন ইমেজ, শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং আওয়ামী পরিবারের- এমন নেতাই বেছে নেওয়া হবে।

ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ মেয়াদ শেষ করার আগেই ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তারা পদত্যাগ করেন। এরপর সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান যথাক্রমে আল নাহিয়ান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। তিন মাস ভারপ্রাপ্ত থাকার পর ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাদের ভারমুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মেয়াদকাল দুই বছর। আর মেয়াদকালের মধ্যে সম্মেলন আয়োজন করার নিয়ম থাকলেও তা করতে পারেনি জয়-লেখক। পরে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের আয়োজনের নির্দেশনা দেয়।

ছাত্রলীগ,৩০তম জাতীয় সম্মেলন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close