আ. লীগ দেশের মানবাধিকার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে: মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশর মানবাধিকার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই কথা শুধু আমরা বলি না, এটা দেশের সকল পেশার সকল মানুষ জানে। এমনকি বর্হিবিশ্বও এই ব্যাপারে সোচ্চার। তাই তো র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬ জন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্পর্কিত খবর
বিজয়ের মাসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও আব্দুস সালামসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ বলেছে- রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করেছে বিএনপি, এরা কী মেরামত করবে? অথচ গত ১৪ বছর গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্র, অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সমাজসহ সকল কাঠামো একটা একটা করে ধ্বংস করেছে তারা। এগুলো বিএনপি কীভাবে ধ্বংস করলো, কখন করলো, কোনটা করলো- সেটা আওয়ামী লীগ দেখাক। এদের স্বভাবই হলো, উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো।
তিনি বলেন, শুধু ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সাড়ে চারশর বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা এখন কারাগারে। গত ১৫ দিনে এই সরকার বিশেষ অভিযানের নামে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, একটি স্বাধীন দেশে রাজনীতিকদের রাজনীতি করার স্বাধীনতা নেই। কোনো অনুষ্ঠান সফল হতে গেলে সেটিকে ব্যর্থ করার জন্য নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। বাংলাদেশ এই অবস্থায় এসে পৌঁছাবে, সেটা মুক্তিযোদ্ধারা কোনোদিন আশা করেননি।
মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, অর্থনীতি খাঁদের কিনারায় পড়ে গেছে। শুধু গায়ের জোরের ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে আজ লুটপাট, ব্যাংক লুট, রিজার্ভ লুট, টাকা পাচার হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। মানুষের আশা ভরসার শেষ স্থল বিচার বিভাগকেও দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রায় ছয় শতাধিক গুম করেছে, এক হাজারের বেশি বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড করেছে। বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার জন্য লাখের ওপর মামলা দিয়েছে। যার আসামি ৩৭ লাখের বেশি। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বানোয়াট মামলায় সাজা ভোগ করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একই রকম বানোয়াট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সরকার জনগণকে ভয় পাচ্ছে। ভয় পাচ্ছে বিরোধী কণ্ঠস্বরকে। নিজেদের অপকর্মের জন্য তারা ভয়ে ভীত। তা না হলে একটি গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে এত কাণ্ডকারখানা, এত বর্বোরোচিত আচরণ কেন করতে হবে?
বর্তমান সরকারের আমলে নির্বাচন আর কেউ বিশ্বাসযোগ্য মনে করে না মন্তব্য করে বিএনপি এ নেতা বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে জনগণ আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় না। অতএব তাদের বিদায় করতে হবে। আর তাদের বিদায় করতে হলে জনগণের মধ্যে আরো ইস্পাত কঠিন গণঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। গণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকাকে সরাতে হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম
