১১ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবে জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ওইদিন দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করে জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে। এই সরকারকে নিজেদের আন্দোলনের ফসল বলে দাবি করে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ বাদে দেশের সকল রাজনৈতিক দল অগণতান্ত্রিক সরকারের ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ জানায়।
তিনি বলেন, দেশকে রাজনীতিহীন করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করা হয়। তদানীন্তন সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে নিজেরাই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দুর্নীতি ও অন্যায় কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ায় তারা জনগণের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়নি। সেনা সমর্থিত সেই সরকার নিরাপদ প্রস্থানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতায় মিলিত হয়ে ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর একটি নির্বাচনের আয়োজন করে। সমঝোতার এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
সম্পর্কিত খবর
জামায়াতের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ওয়ান ইলেভেনের সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশকে রাজনীতিহীন ও গণতন্ত্রহীনতার দিকে নিয়ে যায়। তারা দেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার, ন্যায় বিচার, ভোটাধিকার ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে। আদালতের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। অথচ দেশের সকল রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। আদালতের যে রায়ের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়, সে রায়েও পরপর দুটো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার দলীয় স্বার্থে আদালতের নির্দেশনাকে অগ্রাহ্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেশে এক মহাসংকট সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে দেশে যে রাজনীতিহীন ও গণতন্ত্রহীনতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা থেকে জাতি মুক্তি চায়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
ওয়ান এলেভেনের এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার জন্য দেশের সকল মহানগরী শাখাকে আলোচনা সভার আয়োজন করার ও দেশবাসীকে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।