• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সরকার ভোটের মোকাবিলা করতে সাহস পায় না: সাকি

প্রকাশ:  ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এই সরকার ভোটের মোকাবিলা করতে সাহস পায় না। গত ১৪ বছরে তারা এত অপরাধ করেছে, এত লুট করেছে, যে ভোটের মুখোমুখি হওয়ার সাহস তাদের নেই।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের ১৪ দফা আদায় এবং বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বলেছিল, তারা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করবে। সেই সময় থেকে আমরা বলে আসছি, কীভাবে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে? একটি পথ হচ্ছে, আত্মনির্ভরশীল হয়ে টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তৈরি এবং দাম সাশ্রয়ী রাখা। কিন্তু ওনারা (সরকার) এই পথে গেলেন না।

তিনি বলেন, দেশপ্রমিক বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক দলগুলো টেকসই এবং সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথ দেখিয়েছিলেন। সরকার সেই পথে যায়নি। বরং বিদ্যুৎ সংকটকে পুঁজি করে কীভাবে কতিপয়ের পকেট ভরা যায় সরকার সেই নীতি গ্রহণ করেছে। তারা (সরকার) গেলেন ভাড়া করা বিদ্যুতের দিকে। এই ভাড়া করা বিদ্যুৎ নির্ভর করে বিদেশ থেকে আমদানি করা তেল, ডিজেল, ফার্নেশ ওয়েলের ওপর। এখন এগুলোর দাম বেশি পড়ছে। তাই সরকার বলছে, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কাজেই বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা আরো বলেন, আমরা ২০০৯ সালে বলেছিলাম, দেশের স্থলভাগে এবং সমুদ্রভাগে পর্যাপ্ত গ্যাস আছে। আপনারা এই গ্যাস উত্তোলণের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তারা সেটি শোনেনি। এখন পর্যন্ত দেশের সংকট মোকাবিলা করার জন্য যে পরিমাণ গ্যাস উত্তোলন করা দরকার, সেখানে সরকার যেতে পারেনি।

সরকারের ভুলনীতির জন্য আজকে সব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর দায় তারা জনগণের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ঘাড় একটাই পেয়েছেন যেখানে তারা সমস্তকিছু চাপিয়ে দেন।

তিনি বলেন, দেশে জনগণের ভোটাধিকার না থাকলে, সরকার ভোটের তোয়াক্কা না করে কেবল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের কী পরিণতি হয়, এক বিদ্যুৎ খাতের দিকে তাকালেই তা বোঝা যায়। মাসে মাসে জনগণের পকেট কেটে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা কতিপয় মানুষ। এটিই হচ্ছে ভোটারবিহীন সরকারের আসল রূপ।

সরকার উন্নয়নের মূলা ঝুলাচ্ছে মন্তব্য করে সাকি বলেন, এই উন্নয়নে জনগণ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ মেট্রোরেল চালু হয়েছে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য। আর এদেশে এমনভাবে মেট্রোরেল চালু করেছে, যেখানে সাধারণ মানুষ চলতে পারবে না ভাড়ার জন্য। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় মেট্রোরেল বানাবেন, আর সাধারণ মানুষ সেটাতে চড়তে পারবে না, এমন উন্নয়ন জনগণ চায়নি।

তিনি বলেন, এ সরকারকে বিদায় দিতে হবে। আজকে সংবিধানের এমন ক্ষমতা কাঠামো দরকার, যেখানে সরকার, সংসদ, বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে। এই ব্যবস্থা তৈরি করার মধ্য দিয়ে দেশ গণতন্ত্র ফিরবে, ভোটাধিকার সুরক্ষিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি ভোট চুরি করে দেশের ১৮ কোটি মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছেন। ১৮ কোটি মানুষের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছেন।

ভোটাধিকার রাষ্ট্রের ভিত্তি মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি রাষ্ট্র নাগরিকের স্বার্বভৌমত্বে ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। নাগরিকের স্বার্বভৌমত্বের প্রথম পরিচায়ক তার ভোটাধিকার। তারা সরকার গঠন করবেন। সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। এই ভিত্তি যখন আপনারা (সরকার) ধ্বংস করেন, তখন আপনারা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যান।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

জোনায়েদ সাকি,গণসংহতি আন্দোলন,সাহস,সরকার,ভোট,মোকাবিলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close