• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ওয়াকওভার চাই না, খেলে জিততে চাই: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ:  ১৭ জুন ২০২৩, ০৯:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি একটি বড় দল, তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলো। আমি তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানাবো। কারণ আমরা ওয়াকওভার চাই না, খেলে জিততে চাই।

শুক্রবার (১৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

‘সরকার বিএনপিকে মাঠ ছাড়া করার ষড়যন্ত্র করছে, মামলা-গ্রেফতার করছে’- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য নাকচ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, উৎসবমুখর হয় সেটাই আমরা চাই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি সবসময় নির্বাচন থেকে পালিয়ে যায়। মির্জা ফখরুল সাহেব, রিজভী সাহেব নির্বাচন থেকে পালিয়ে যাওয়ার অজুহাত তৈরি করতেই এসব বক্তব্য দিচ্ছেন।

নির্বাচন ভন্ডুল বা প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির উদ্দেশ্য, এমন দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপির বক্তব্যে এমনটাই মনে হয়। তারা নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি (নিশ্চয়তা) চায়। সেটি পেলে অংশ নেবে, নাহলে নয়। কিন্তু এ গ্যারান্টিতো জনগণ বা সরকার বা নির্বাচন কমিশন কেউই দিতে পারবে না। আর বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও জনগণ যে ব্যাপকভাবে অংশ নেয়, সেটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। কোন দল অংশ নিলো- তার চেয়েও বড় কথা নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, অগ্নি সন্ত্রাসের হুকুমদাতা-অর্থদাতা হিসেবে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। মামলা সরকার চালু করতে পারে না। অভিযুক্তদের বাড়িয়ে নেওয়া সময়, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ- এগুলোর মেয়াদ শেষ বা ভ্যাকেট হলে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী আবার মামলা চালু হয়ে যায়। তেমন কিছু সংখ্যক মামলা চালু হয়েছে।

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে, রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করতে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। যারা রাজনীতি করে না, রাজনীতি বোঝে না, জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েছিল, সেসব জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা- এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, এর বিচার হওয়া বাঞ্ছনীয়। জনগণ চায় এর বিচার হোক। আপনারা জানেন, যারা অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার, তারা সারা বাংলাদেশে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করে অগ্নিসন্ত্রাসের হুকুমদাতা-অর্থদাতাদের গ্রেফতার ও বিচারের জন্য সরকারের কাছে দাবি দিচ্ছে।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের অনেকের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও বিএনপির যেসব নেতা হুকুমদাতা-অর্থদাতা ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে এখনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু যেহেতু এটা জনগণের দাবি, তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। তবে আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ আগামীর সরকার নির্বাচিত করুক।

ঈদের পরে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রায়ই তারা এমন কথা বলেন। রমজানের ঈদের আগেও বলেছিলেন ঈদের পরে আন্দোলন। এখন তাদের কোরবানির ঈদের পরে আন্দোলন কী এ বছর না আগামী বছর, সেটিই প্রশ্ন।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের ওপর যদি কেউ নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে থাকে, সেটি হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির সময় হুমায়ুন কবীর বালু থেকে শুরু করে সমগ্র বাংলাদেশে অনেক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। বিশেষ করে যারা মুক্তমনা ছিলেন, তাদের অনেকের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।

সাংবাদিকদের কল্যাণে শেখ হাসিনার সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা, করোনাকালে সাংবাদিকদের কোটি কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া। এগুলো আমাদের সরকারই করেছে।

মন্ত্রী বলেন, আজ গণমাধ্যম অত্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। ১০টি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে ছিল, এখন ৩৮টি। সাড়ে চারশ দৈনিক পত্রিকা ছিল, এখন এক হাজার ২৫০, বেসরকারি রেডিও ছিলই না, এখন অনেকগুলো এফএম আর কমিউনিটি রেডিও। হাতে গোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল, এখন কয়েক হাজার। এভাবে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে এবং তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

তথ্যমন্ত্রী,ওয়াকওভার,ড. হাছান মাহমুদ,আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close