• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

বড় জমায়েত করে সাংগঠনিক শক্তি দেখাবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ:  ২৯ আগস্ট ২০২৩, ২০:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ঢাকায় নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি দেখাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এইই জন্য ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশ এবং পরদিন আগারগাঁওয়ে পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠে সুধী সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এই দুটি সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেবেন। সমাবেশ দুটিতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় জমায়েত দেখানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশে সারা দেশ থেকে তরুণ এবং যুবকদের আনতে এক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আগারগাঁওয়ের সুধী সমাবেশে ঢাকা বিভাগের সব জেলা থেকে নেতা–কর্মীরা অংশ নেবেন। মূলত ঢাকা উড়ালসড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) উদ্বোধনের পর এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে, এবারের দুটি সমাবেশে বড় জমায়েত নিশ্চিত করতে সংগঠনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সাংগঠনিক ইউনিটকে নির্ধারিত সংখ্যায় লোকসমাগম করতে বলা হয়েছে। কম জনবল নিয়ে এলে সাংগঠনিকভাবে জবাবদিহি করতে হবে। বেশি লোক আনতে পারলে পুরস্কার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সুধী সমাবেশে বড় লোকসমাগম ঘটাতে জেলা নেতা ও দলীয় জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

২২ আগস্ট তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী সাংগঠনিক জেলার নেতাদের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদক জেলা এবং সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর নাম ধরে ধরে পর্যাপ্ত লোক আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগেরশান্তি সমাবেশ

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশগুলোতে প্রধানমন্ত্রী বিগত দিনে সরকারের অর্জন তুলে ধরবেন। আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে জনগণ কী কী সুফল পাবে, তা জানাবেন। এ ছাড়া যথাসময়ে সংবিধান অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কেউ তা ঠেকাতে পারবে না—দলের নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথম আলোকে বলেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ঢাকা ছাড়াও সিলেট, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমাবেশ হবে। এগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করে। কেউ যদি মনে করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে, সেটা ভুল করবে।

এত দিন বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ছিল আওয়ামী লীগ। চলতি আগস্টে এই পাল্টা কর্মসূচি থেকে কিছুটা সরে এসেছে দলটি। সেপ্টেম্বরে বিএনপির পাল্টা হিসেবে নামমাত্র কর্মসূচি থাকবে। তবে বড় বড় সমাবেশে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সেপ্টেম্বরের শুরুতে দুটি বড় সমাবেশ দিয়ে সবাইকে চমকে দিতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ যে জনপ্রিয়, তা দেশে-বিদেশে দেখানো একটা লক্ষ্য। আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে—রাজপথে বিএনপি কোনো চাপেই ফেলতে পারেনি আওয়ামী লীগকে, তা দেখানো। সেপ্টেম্বর থেকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এভাবে বড় বড় সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, গত ২৮ জুলাই বিএনপি পল্টনে যে মহাসমাবেশ করে, তাতে বিপুল লোকের জমায়েত হয়। এর পর থেকেই বড় জমায়েতের চাপ অনুভব করে আওয়ামী লীগ। প্রথমে ২ আগস্ট রংপুরে বড় সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকাসহ সারা দেশে অন্তত ১০টি বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে ক্ষমতাসীন দলের।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেন, দুটি সমাবেশের দিনই ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়বে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হবে না। আওয়ামী লীগ যে রাজপথে কতটা শক্তিশালী এবং জনপ্রিয়—এটাই দেখানো হবে।

সুধী সমাবেশে চার হাজার বাস-ট্রাক আসবে

সুধী সমাবেশের আয়োজন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তবে ঢাকা বিভাগের ১১টি জেলা ও চারটি মহানগর কমিটিকে নির্দিষ্ট সংখ্যায় লোক জমায়েত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে এক লাখ করে লোকের জমায়েত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগকে বলা হয়েছে ৫০ হাজার লোক আনতে। তাদের ৫০০ বাস-ট্রাক ভরে নেতা-কর্মীদের আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে জেলাগুলোকে গড়ে ৩০ হাজার করে লোক জমায়েত করতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে চার থেকে পাঁচ লাখ লোকের জমায়েত করার লক্ষ্য আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close