• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে আবেদন করেছে পরিবার

প্রকাশ:  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:১৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার অনুমতি চেয়ে চলতি মাসের ৪ঠা সেপ্টেম্বর আবেদন করেছে তার পরিবার। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে তার পরিবারকে আদালতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দেশের একটি গণমাধ্যমকে এমনটিই জানিয়েছেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

জানা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর চিঠির মাধ্যমে একটি আবেদন করেন বেগম জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার। চিঠিতে ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখ উল্লেখ আছে। এটি ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর ইস্কান্দার মীর্জার আবেদনপত্রে বলা হয়, বেগম জিয়ার জীবন রক্ষার্থে ও তার শারীরিক সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে উন্নতমানের ফিজিওথেরাপিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দেশের বাইরে 'advance medical centre'- এ চিকিৎসা গ্রহণ করা আবশ্যক। এমতাবস্থায় সকল শর্ত শিথিল পূর্বক তাকে স্থায়ী মুক্তি এবং বিদেশে গমনের অনুমতি প্রদানের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে সপ্তমবার বর্ধিত মুক্তির মেয়াদ শেষ হয় রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর)। এর আগেই তার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অষ্টমবারের মতো বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা স্থগিত করে আগের দু’টি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শর্ত দু’টি হলো- খালেদা জিয়া আগের মতোই ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। এই সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

বিএনপির যুগপৎ একদফা আন্দোলনের অন্যতম দাবি বেগম জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ। বিএনপি নেতাদের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে প্রেরণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। পরে আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি কাগজপত্রের আলোকে ভেবে দেখবে।

পরদিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। বিদেশে চিকিৎসার জন্য কোনো আবেদন তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়নি। আর বিদেশের চিকিৎসার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই, এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।

তবে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ৫ সেপ্টেম্বরেই বেগম জিয়াকে বিদেশ নেয়ার আবেদন করা আছে। তার অভিযোগ, এখন বিষয়টি আদালতে যেতে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সময়ক্ষেপণ করছেন। দু’টি মামলায় সাজা হওয়ায় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমানে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত থাকায় তিনি কারামুক্তি রয়েছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ের পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার সাজা আরো পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন একই আদালত।

২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এরপর থেকে মুক্তির মেয়াদ বাড়তে থাকায় তাকে আর কারাগারে যেতে হয়নি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএমহোসেন পার্থ কোষাধক্ষ্য,৬নং ওয়ার্ড, কুতুবপুর ইউনিয়ন, যুবদল

পরিবার,আবেদন,খালেদা জিয়া,বিদেশ,বিএনপি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close