• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

আগুন, ভাঙচুর, মৃত্যু, ধরপাকড়ে শেষ হলো বিএনপি-জামায়াতের হরতাল

প্রকাশ:  ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৪৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

শনিবারের (২৮ অক্টোবর) সমাবেশে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ডাকা বিএনপি এবং জামায়াতের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শেষ হয়েছে। সড়কে গণপরিবহন ছিল তুলনামূলক কম, এ সময়ে আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করেছে নগরবাসী। হরতাল সমর্থকরা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেয়, আগুন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একজন নিহতের ঘটনা ঘটে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতাকে।

হরতালের সমর্থনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করে বিএনপি এবং জামায়াতের সমর্থকরা।

এদিকে, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাকে বর্বরোচিত উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলো দেশের মানুষ, মারা গেলেন পুলিশের একজন সদস্য—এখন আবার তারা হরতাল ডেকেছে। পুলিশের মৃত্যুর ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলা শুরু হয়েছে মাত্র, আরও হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত সবাই মামলা করবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া হরতালে শুরুতেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়া বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শেখর পরিবহন, মোহাম্মদপুর চার রাস্তার মোড়ে স্বাধীন পরিবহন, মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে পরীস্তান পরিবহন এবং বংশালে বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ডেমরায় রবিবার ভোরে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে নাঈম নামে এক শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যায়। মোহাম্মদপুরে বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। যদিও বিএনপি দাবি করছে—নিহত ব্যক্তি মো. আব্দুর রশিদ আদাবরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছিলেন, হরতালকে কেন্দ্র করে কেউ নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে, হামলা-বিশৃঙ্খলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। গোয়েন্দা হেফাজতে নেওয়ার পর মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম গুলশান নিজ বাসভবনে গণমাধ্যমকে বলেন, ডিবি পুলিশের লোকজন বাসায় এসে মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বাসার সবার সাথে কথা বলে। তারপর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়। ঠিক দশ মিনিট পর আবার ফিরে এসে মির্জা ফখরুলকে নিয়ে যায়। তিনি অসুস্থ, তার চিকিৎসা চলছে, বয়স ৭৫—যদি তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তাহলে তা শেষ করে তাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়, এ আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাবা মির্জা ফখরুলকে আটকের খবর শুনতে পেয়ে তার বড় মেয়ে ড. শামারুহ মির্জা বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেলের কারণে তার বাবা অসুস্থ। রাতে তাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়েছে। তিনি অবিলম্বে তার বাবার মুক্তি চেয়েছেন।

শুধু মির্জা ফখরুল নয়, মির্জা আব্বাসসহ বিভিন্ন বিএনপি নেতার বাসায় অভিযান চালিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা। এছাড়া দিনব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কতজন গ্রেফতার হয়েছে সেই সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। সব তথ্য সমন্বয় করে পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে বাড়ানো হয় র‍্যাবের নিরাপত্তা। নামানো হয় বিজিবি।

এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যা, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ৮৪৯ জনকে আসামি করে শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান রবিবার (২৯ অক্টোবর) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে নিহত পুলিশ সদস্যের জানাজায় অংশ নিয়ে জানান, যারা বিশৃঙ্খলা করবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। যারা সমাবেশে বিশৃঙ্খলা এবং পুলিশ হত্যাকাণ্ড ঘটনায় জড়িত, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হবে। শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

হরতাল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close