• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে নয়: রিজভী

প্রকাশ:  ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটে অংশগ্রহণ করা বা না করা দু’টি সিদ্ধান্তই দেশের প্রতিটি ভোটার ও রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি কখনোই নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে নয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সব গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন পরিচালনা করছে। গণমানুষের প্রেরণায় তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে পরিকল্পিত ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচনকে বর্জন করেছে বিএনপিসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দল। ১২ কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমাদের এই শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, আরো বেগবান হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই প্রতিজ্ঞায় আমাদের প্রেরণা জোগাচ্ছে জনগণের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা ও অভূতপূর্ব সমর্থন, তথা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। ডামি নির্বাচন বর্জনকারী প্রতিটি দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের একটিই লক্ষ্য, সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে হলেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা শিগগির জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ ও বিতর্কিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি একটি নজিরবিহীন ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে যেন ১৮ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত ভোটের প্রচার ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি তথা সভা-সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি না দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি একটি তথাকথিত নির্বাচনের নামে, ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে ডামি নির্বাচন আয়োজনের যে অপপ্রয়াস, সেটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করতেই অথর্ব ও অযোগ্য নির্বাচন কমিশন জনবিদ্বেষী সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। প্রকারান্তরে এটি আবারও প্রমাণ হয়েছে, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর কেন সর্বজনীন অনাস্থা ও বিশ্বাসহীনতা বিরাজমান এবং সর্বাঙ্গীনভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এই কমিশনের অধীনে কেন কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা ফেয়ার ইলেকশন সম্ভব নয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বস্তুত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার মোহে শেখ হাসিনার দ্বারা আদিষ্ট হয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে, নির্বাচন কমিশনের এই দুরভিসন্ধি একাধারে অনৈতিক, অবৈধ ও অসাংবিধানিক। জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখতে দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের ভয়াবহ দুর্গতির মধ্যে নীলনকশার এই অন্যায় পদক্ষেপকে গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তি ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের নব্য অপতৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে ও নিন্দা জানাচ্ছে। গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ উদ্যোগ দেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনীতিক ও কূটনীতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করে তুলবে।

এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলন একটি সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। সভা-সমাবেশ ব্যাহত করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও দাবি আদায়ের সংগ্রামের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন, আমরা আশা করছি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তারা এটি প্রত্যাহার করবে।

তিনি বলেন, ভোটে অংশগ্রহণ করা বা না করা দু’টি সিদ্ধান্তই দেশের প্রতিটি ভোটার ও রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। গণতান্ত্রিক বিশ্বের সব দেশে, সব সমাজে, ব্যক্তিগত ও দলীয় এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো হয়, সেটিই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয়তম রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের সমর্থনকে শক্তি হিসেবে ধারণ করা বিএনপি কখনোই নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে নয়। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে সেটিতে বিএনপির বিপুল বিজয় অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী, ইনশাআল্লাহ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এটি আজ স্পষ্ট, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কলঙ্কিত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ২০২৪ সালেও প্রহসনের নির্বাচনের ছক এঁকেছে আওয়ামী লীগ। জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ভোটের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই সমঝোতাভিত্তিক প্রকল্পকে সংজ্ঞাগতভাবে নির্বাচন বলে অভিহিত করা যায় না। খোদ শেখ হাসিনার নির্দেশে ডামি নির্বাচন আয়োজনের গণবিরোধী উদ্যোগকে নির্বাচন বলে দাবি করা একটি হাস্যকর বিষয়।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

রুহুল কবির রিজভী,বিএনপি,নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close