• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

নির্বাচনী সহিংসতায়

নওগাঁ-৬ আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৬ জন কর্মী-সমর্থক আহত

প্রকাশ:  ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৯
আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের জেরে সোমবার সন্ধ্যায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতিকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় মারপিটে উভয় পক্ষের ৬জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ২জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপর ২জন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছে এবং বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাড়ি ফিরে গেছে।

আহতরা হলেন রাণীনগর উপজেলা আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫০) ও তার ভাই মাহাবুর হোসেন সুমন (৪৬), রাণীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক (৩১), রবিউল ইসলাম (৩৩), আ’লীগনেতা ফারুক হোসেন (৪৫), কাশিমপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মন্ডল (৪৭)। এছাড়া নৌকার সমর্থক-কর্মী রাজ (৩৯) ও বাদল হোসেন (৩৫) নামের অপর দুইজনও আহত হয়েছে।

রাণীনগর উপজেলা আ’লীগের সদস্য ও এমপি হেলালের ছেলে রাহিদ সরদার বলেন শুরু থেকেই আমরা নৌকার পক্ষে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছি। কিন্তু রবিবার রাতের কোন এক সময় আত্রাই উপজেলার সাহাগোলা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের হাতিয়াপাড়া গ্রামে নৌকার নির্বাচনী অফিসে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনেরা হামলা করে নির্বাচনী অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর ও পোস্টার ব্যানার ছিড়ে ফেলে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চারাপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় উভয় পক্ষের কথাকাটির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন নৌকার সমর্থক বাদল হোসেন নামের এক কর্মীকে আঘাত করে। ফলে ওখানে উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটলে কয়েকজন আহত হয়। অপরদিকে উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আনোয়ার হোসেন নৌকা সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক কথা বললে সেখানে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন রাজ ইসলাম নামের নৌকা সমর্থককে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিটের সৃষ্টি হয়।

তিনি আরো বলেন দিন যতই যাচ্ছে ততই স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার লোকজনেরা নির্বাচনের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পায়তারা করছে এবং শান্তিনগরীর ভাবমূর্তি নষ্ট করছে যা কোন পক্ষের জন্যই মঙ্গলজনক নয়। সুমনের লোকজন আমাদের লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদান এবং বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথা বলা অব্যাহত রেখেছে। মানুষের মুখে মুখে নৌকার পক্ষে গড়ে ওঠা গণজোয়ারকে প্রতিহত করতে এমন পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রকে সুমন ও তার দোসররা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা যদি এমন জঘন্যতম কাজ থেকে বিরত না হয় তাহলে আমরাও নৌকার সম্মান রক্ষার্থে কঠোর ভাবে এমন অন্যায় কর্মকান্ডকে দলীয় শক্তি দিয়ে প্রতিহত করবো ইনশাল্লাহ।

আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক নাদিম হোসেন মুঠোফোনে জানান সোমবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনের লোক আজাহার বাউল নামের এক ব্যক্তি তাকে নৌকার পক্ষে কাজ না করার হুমকি-ধামকী প্রদান করে। নৌকার পক্ষে কাজ করলে তাকে কেটে টুকরো টুকরো করার হুমকি প্রদান করে ওই আজাহার বাউল। এমন ভাবে সুমনের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা নৌকার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে বলে জানান চেয়ারম্যান নাদিম।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাড. ওমর ফারুক সুমন জানান নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার লোকেরা তার প্রচারনার কাজে বাধার সৃষ্টি করে আসছে। তার লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদান অব্যাহত রয়েছে। সোমবার বিকালে তার স্ত্রী নির্বাচনী প্রচারনার কাজে উপজেলার কাশিমপুর চারাপাড়া এলাকায় গেলে নৌকা প্রার্থীর লোকজনরা বাধা দিয়ে আটকে রাখে। আমি সেখানে গিয়ে স্ত্রীসহ অন্যদের উদ্ধার করার সময় নৌকার লোকেরা তাদের উপর হামলা করে। ফলে তার কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হলে তাদের হাপাতালে নিয়ে এলে সেখানে আবারো নৌকার লোকজনেরা হামলা করে। এতে করে গুরুত্বর আহত দুইজনকে জেলা সদর ও অপরদুইজনকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ জানান মারপিটের পৃথক পৃথক স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত ভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্বাচন,রাজনীতি,সহিংসতা,আহত
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close