• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কাদের: নির্বাচন নিয়ে আমরা বদনাম করতে চাই না

প্রকাশ:  ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:২৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “এজেন্টদের ভোট ক্যাম্পেইন করার কোনো সুযোগ নেই। যারা এজেন্ট থাকবেন তারা নিয়ম-কানুন মেনে কাজ করবেন। নির্বাচন নিয়ে আমরা বদনাম করতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী সত্যিকার অর্থে একটি ‍সুষ্ঠু নির্বাচন চাইছেন।”

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গণতন্ত্র বিকাশে বিএনপি বাধা মন্তব্য করে কাদের বলেন, “তারেক রহমান বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছে। তার বাবা জিয়াউর রহমানও গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। হত্যা, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি যারা চালু করেছে, তারা এদেশের গণতন্ত্রকে বিকাশে বাধা দেবে, এটাই স্বাভাবিক।”

সংকটের কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিশ্ব সংকটের প্রভাব প্রতিক্রিয়া থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন নই। আমরা গ্লোবাল পলিটিক্সের বিভিন্ন কারণের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য অংশ। গাজায় যে যুদ্ধ চলছে, ইসরায়েলের যে হামলা চলছে, সুদান আবারও বিভক্ত হওয়ার পথে। এই অবস্থায় আমরা সংকটে আছি। দোষটা বড় বড় দেশের, আর শাস্তি পাচ্ছি আমরা।”

তিনি বলেন, “বাজারে পণ্যের যে ঊর্ধ্বগতি, তা নিয়ে মানুষ দুঃখ-কষ্টে আছে। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আমরা দায় এড়াতে পারি না। পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, পরিবহনের অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি। এসব সংকট আজ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এরমধ্যে একটা সাধারণ জাতীয় নির্বাচন করতে হচ্ছে। এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “কেউ যদি বলে এই সংকটের মুহূর্তে এখন নির্বাচন না করতে তাহলে আমরা বলব, আমাদের সংবিধান আছে। সংবিধান আমাদের নির্বাচন দিয়েই রক্ষা করতে হবে। এটা আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের এই নির্বাচন করতে হচ্ছে। বিশ্ব সংকটের যে বাস্তবতা, পাশাপাশি আমাদের অপজিশন বিএনপি নির্বাচন শুধু বয়কট করেনি, পণ্ড করতে চায়, বানচাল করতে চায়। মিছিল বিক্ষোভ, সমাবেশ করে নয়; তারা সন্ত্রাস-সহিংসতার মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। তাদের সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তারা ৩০০ এর মতো বাসে আগুন দিয়েছে। পুলিশ হত্যা, আনসার সদস্য হত্যা করেছে।”

৩৮২ স্বতন্ত্র

ভোটের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়েছে ১৫ নভেম্বরের পর। ওইদিন দ্বাদশ সংসদের তফসিল ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন তারা। আর সংসদে যাওয়ার ভাগ্য নির্ধারণ হবে ৭ জানুয়ারি। ওইদিন হবে জাতীয় সংসদের ভোট।

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের ভোটে মাঠে রয়েছে ২৭টি দল। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই নির্বাচনি হাওয়া বইয়ে দিচ্ছেন। ভোটকেন্দ্রে ভোটার টানতে ক্ষমতাসীন দল নিজ দলের নেতাদের “স্বতন্ত্র” হওয়ার অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছে। ফলে অনেক স্থানে নৌকার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এই স্বতন্ত্রদের।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর এখন পর্যন্ত ২৭টি দলের ১৫১৩ জন ও স্বতন্ত্র ৩৮২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। এই ১৮৯৫ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। আদালতের আদেশে আরও কিছু প্রার্থী যুক্ত হতে পারেন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ২৬৩ জন; এর বাইরে আওয়ামী লীগের প্রতীক ব্যবহার করছেন শরিকদলের ৬ প্রার্থী। আর মহাজোট ছেড়ে “আসন সমঝোতা” করে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছে ২৬৫ জন।

টানা তিনবার সংসদে আওয়ামী লীগ

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৯টি দলের অংশগ্রহণে হয়েছিল ভোট। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর হওয়া এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪৮.০৪% ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। এই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ভোট পায় ৩২.৫০% আর জাতীয় পার্টি পায় ৭.০৪% ভোট।

দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় ১২টি দল। বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে এই নির্বাচনে ৭২.১৪% ভোট পেয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। আর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পক্ষে ৭% ভোটার রায় দেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় ৩৯টি দল। এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট পড়ে ৭৬.৮০%, ধানের শীষে ১৩.৫১% আর লাঙ্গলে ৫.৩৭% ভোট পড়ে। পরে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। আর সংসদে প্রধান বিরোধী দল হয় জাতীয় পার্টি।

ওবাইদুল কাদের,নির্বাচন,আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close