• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ভোট নিয়ে সরকার ছটফট করছে: রিজভী

প্রকাশ:  ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:০৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একতরফা নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। কেন্দ্রে ভোটার আসবে এমন নিশ্চয়তাও পাচ্ছে না সরকার। এজন্য ৭ জানুয়ারির ভোট মিশনে ছটফট করছে তারা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন প্রার্থী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, অবৈধ ক্ষমতার মেয়াদ বাড়াতে পূর্বনির্ধারিত ফলাফল ঘোষণার পাতানো ডামি নির্বাচন ঘিরে ভয়ংকর অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। বন্দুক-পিস্তল, রামদা, রড, জিআই পাইপ, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে মিছিল করছে তারা। নৌকা-ডামি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, রাষ্ট্রযন্ত্র, প্রিসাইডিং অফিসার সব আওয়ামীময়-একাকার হয়ে গেছে। ছলেবলে কৌশলে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনার জন্য মরিয়া তারা। প্রতিটি জনপদের মানুষ আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের দলবাজ কর্মকর্তাদের প্রকাশ্য হুমকি-ধমকিতে সন্ত্রস্ত। ভোট কেন্দ্রে না গেলে হত্যা, গ্রামছাড়া করার হুংকার দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো প্রার্থী হুমকি দিচ্ছে, ভোট কেন্দ্রে না গেলে নাগরিক সুবিধা বাতিল করা হবে। ভোট না দিলে মসজিদ-কবরস্থান বন্ধ করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগবাটোয়ারার নির্বাচনে কে জিতবে, তার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। এটা জানার পর প্রার্থীরা প্রচার থামিয়ে দিয়েছেন। প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের জন্য যে নির্বাচনি ক্যাম্প খোলা হয়েছিল, এখন তা জনমানবহীন। শুরুতে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট গণমাধ্যম নানা এঙ্গেলে প্রচার চালিয়ে নির্বাচন জমানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রার্থী ও তাদের সমর্থক এবং সাধারণ মানুষের ভোট নিয়ে আগ্রহ না থাকায় গণমাধ্যমের আগ্রহেও ভাটা পড়েছে। কিন্তু নানা চাপের কারণে তারাও প্রচার চালাতে বাধ্য হচ্ছে। ভাগবাটোয়ারার এই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে নিজের পোলিং এজেন্ট দেওয়া নিয়েও প্রার্থীদের মাঝে কোনো আগ্রহ নেই। কেউ কেউ পোলিং এজেন্ট সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সরকার যত যাই করুক, কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবে না। শেখ হাসিনা এবং মাফিয়াচক্রের জন্য অনিবার্য পতন অপেক্ষা করছে। ৭ জানুয়ারি জনগণ শেখ হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়ে বিদায় করবে। গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন এগিয়ে যাবে, জনগণের বিজয় হবে।

তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ২৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় স্বীকার করেছেন যে, ২০১৮ সালে রাতে ভোট হয়েছিল। তিনি বলেছেন ৯৯ শতাংশ নয়, ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করতে পারি এবার আর আগের রাতে ভোট হবে না। এ জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ব্যালট পেপার সকালে যাবে। উনার (সিইসি) এই সরল স্বীকারোক্তির পর যেসব জিনগত আওয়ামী মিথ্যুক এতদিন রাতের ভোট নিয়ে বিতর্ক করেছিলেন, তাদের মুখ বন্ধ হবে নিশ্চয়ই। এবারের নির্বাচনে বহু এলাকায় ডামি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরাই প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন কীভাবে ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ডাকাতি করেছিল।

সিইসিকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আপনার যদি ন্যূনতম মনুষ্যত্ব থাকে তাহলে এই প্রহসনের পাতানো ডামি নির্বাচন বন্ধ করুন। পদত্যাগ করুন। নইলে যারা রাতের ভোট করেছিলেন, তাদের মতো আপনাদেরও বিচার একদিন হবেই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, একতরফা নির্বাচন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ একটি হাস্যকর চাপাবাজির ডামি ইশতেহার ঘোষণা করেছে। মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য ইশতেহারে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অতীতে কোনো প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করেনি। বরং উলটোটা করেছিল। ইশতেহারে যা বলে তার সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকে না।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্বাচনি ইশতেহারের মূল কথা ছিল ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। আসলে গত ৫ বছর তাদের নিপীড়ন, খুন-গুম-দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি, লুটপাট আর দুঃশাসনের অগ্রযাত্রা হয়েছে। ঘুস, অনুপার্জিত আয়, কালো টাকা, চাঁদাবাজি, ঋণখেলাপি, টেন্ডারবাজি ও পেশিশক্তি এবং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন তাদের মূলমন্ত্রে পরিণত করেছে। ঘরে ঘরে চাকরির কথা বলে মামলা-লাশ উপহার দিয়েছে। বিসিএস পরীক্ষার নামে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ক্যাডারদের পুলিশ-প্রশাসনসহ সর্বত্রই ঢুকানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে ২৯৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সময়ে ৮৭২১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

রুহল কবির রিজভী,বিএনপি,সরকার,আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close