• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নওগাঁ-৬ আসন

নৌকাতেই আস্থা বেড়েছে শান্তিনগরীর শান্তিকামী মানুষদের

প্রকাশ:  ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৬ | আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৮
আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি

জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ আসন। বড় ধরণের নির্বাচনী সহিংসতা ছাড়া শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সকল কার্যক্রম। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নৌকা ও ট্রাক প্রতিকের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন ভোটাররা। তবে একসময়ের অশান্ত এই জনপদে শান্তির সুবাতাস বহমান রাখতে নৌকার প্রতি আস্থা বেড়েছে শান্তিনগরীর মানুষদের।

বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে এই আসনটি দেশ ও দেশের বাহিরে সর্বহারা নামক সন্ত্রাসী বাহিনী ও জেএমবি নামক আরেক সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্মকান্ডে রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলো। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার থেকে সেই অশান্ত জনপদে বইতে শুরু করে শান্তির সুবাতাস। সেই শান্তির সুবাতাস অব্যাহত রাখতে, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা পেতে নৌকা প্রতিকের প্রতি শান্তিনগরীর মানুষদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপজেলার ত্রিমোহনী বাজার এলাকার ভ্যানচালক রহিম উদ্দিন বলেন গত ২০২০সালে উপনির্বাচনে হেলাল ভাই এমপি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আর আমাকে কোন মোড়ে গিয়ে চাঁদা দিতে হচ্ছে না। অথচ আগে প্রায় প্রতিটি মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন সমিতিতে ৫-১০টাকা করে চাঁদা দিতে হতো। এতে করে দিনে প্রায় ১০০টাকা চাঁদা দিতেই শেষ হতো। তাই আবারো আমরা নৌকায় ভোট দিয়ে হেলাল ভাইকে এমপি হিসেবে নির্বাচিত করতে চাই।

উপজেলার লোহাচ’ড়া গ্রামের ভটভটি চালক আসলাম হোসেন বলেন হেলাল ভাই এমপি হওয়ার আগে উপজেলার রেলগেইট, উপজেলা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন মোড়ে প্রতিটি ভটভটি চালককে প্রতিদিন ১০-২০টাকা করে চাঁদা দিতে হতো। কিন্তু গত ৩বছর যাবত আর আমাদের কোন চাঁদা দিতে হয় না। শুধু ভটভটিই নয় বর্তমানে কোন অটোচালক, সিএনজি চালকসহ কোন চালককে আর কোন মোড়ে গেলে কোন চাঁদা দিতে হয় না। তাই আবারো আমরা হেলাল ভাইকে এমপি হিসেবে চাই।

নৌকার মাঝি ও বর্তমান এমপি আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন উপনির্বাচনে আমি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই ভ্যান, অটোচার্জার, ভটভটি ও সিএনজি চালকদের কাছ থেকে বিভিন্ন সমিতির নামে চাঁদা আদায় বন্ধ করেছি, প্রতিটি এলাকা থেকে আতিনেতা পাতিনেতাদের বিভিন্ন কাজের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায় বন্ধ করেছি, দখলবাজী বন্ধ করেছি। এখন আর কাউকে বিদ্যুতের লাইন নিতে কোন দালালকে হাজার হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় না। বিভিন্ন অফিস-আদালতে নেতাদের দৌরাত্ম বন্ধ করেছি। এখন আর কাউকে একটি চাকরীর জন্য ১০জনকে টাকা দিয়ে নি:স্ব হয়ে পথে বসতে হয় না। আমি প্রতিটি এলাকা থেকে দালালদের উচ্ছেদ করার চেস্টা করেছি। আমি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক চেস্টার বিনিময়ে দীর্ঘদিন খানাখন্দকে পড়ে থাকা রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ সড়কের ২২কিমি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির পাঁকাকরণের কাজ সম্পন্ন করেছি। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষরা উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হয়েছেন। প্রতিটি গ্রামের গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার চেস্টা করেছি।

তিনি আরো বলেন আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা বিগত সময়ের এমপি ও তাদের লোকজনের দ্বারা নানা ভাবে অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়েছি। সেই প্রেক্ষাপটে আমি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর কাউকে প্রতিহিংসা মূলক হয়রানী করিনি। আমি এখন পর্যন্ত দুই উপজেলার কোন মানুষের শরীর থেকে একফোটা রক্ত বিন্দুও ঝড়তে দিইনি। আমি দিন-রাত প্রতিটি মানুষের ফোন রিসিভ করে কথা বলার চেস্টা করেছি। চেস্টা করেছি এই শান্তিনগরীর মানুষদের শান্তি ও সুখে রাখতে। আমি চেস্টা করেছি দেশরতœ শেখ হাসিনার প্রতিটি সেবা দুই উপজেলার প্রতিটি মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছে দিতে। তবে কতটুকু সফল হয়েছি তা এই অঞ্চলের মানুষরা বলতে পারবেন। তাই আমি শতভাগ বিশ্বাস করি শান্তিনগরীর এই শান্ত পরিবেশ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এই অঞ্চলের মানুষ আগামী ৭জানুয়ারী আমাকে নয় শান্তি ও উন্নয়নের প্রতিক নৌকাতেই ভোট দিবেন এবং আবারো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করবেন।

এই আসনে নির্বাচনী মাঠে সরব দেখা গেছে নৌকার মাঝি ও বর্তমান এমপি আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলালকে, ট্রাক প্রতীক জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাড. ওমর ফারুক সুমনকে ও কাঁচি প্রতীক নিয়ে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: নওশের আলীকে।

এছাড়া লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু বেলাল হোসেন জুয়েল, সোনালী আঁশ প্রতিক নিয়ে তৃণমুল বিএনপি’র প্রার্থী পি কে আব্দুর রব, ডাব প্রতিক নিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেস-এর প্রার্থী সরদার মোঃ আব্দুস সাত্তার, আম প্রতিক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পাটি (এনপিপি) প্রার্থী খন্দকার ইন্তেখাব আলম ও ঈগল প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম নামে মাত্র নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। জাতীয় সংসদের ৫১নম্বর নির্বাচনী দুই উপজেলার মোট ভোটার ৩১৯৩৩৫ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৬১০৭৭ জন, নারী ১৫৮২৭১ জন এবং হিজড়া ২জন।

রাণীনগর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা আনোয়ার হোসেনকে যোগ্য মনে করে এই আসনের জন্য নৌকা মাঝি করেছেন। আমরা উপজেলা আ’লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দ দিন-রাত নৌকার পক্ষে কাজ করেছি। এই আসনের মানুষরা জানেন নৌকার মাঝি ছাড়া এই শান্তির সুবাতাস আর কেউ ধরে রাখতে পারবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও সুবিধা সঠিক ভাবে প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিতে নৌকার মাঝির কোন বিকল্প নেই। তাই আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি যে ভোটাররা আগামী ৭জানুয়ারী আবারো নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকাকে বিজয়ী করবেন।

রাজনীতি,নির্বাচন,আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close