• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

মৌলভীবাজার-২

কুলাউড়ায় ২২ বছর পর নৌকার বিজয়

প্রকাশ:  ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৪
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

দেড় দশকের মহাজোটের গ্যাঁড়াকল, ১৫ বছরের ক্ষোভ। তাইত হাটে হাড়ি ভেঙেছে কুলাউড়ার জনগণ।

দীর্ঘ ২২ বছর পর কুলাউড়ায় বিপ্লব ঘটেছে নৌকার। প্রথমবারেই বাজিমাত দেখিয়েছেন নৌর্কার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে নৌকায় ভোট পেয়েছেন ৭২ হাজার ৭শ ১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নাদেল কেন্দ্রীয় আ'লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিসিবির পরিচালক।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৮টায় উপজেলার ১০৩টি ভোটকেন্দ্রের ভোট গণনার পর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।

এক প্রতিক্রিয়ায় কুলাউড়া উপজেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা নৌকাও পেয়েছি, মাঝিও পেয়েছি। তাই ভোট বিপ্লব ঘটেছে। জনগণ এ রায় দিয়েছে সন্ত্রাসের বিপক্ষে, শান্তির পক্ষে। আমরা যে কথা দিয়েছি, আশাবাদী জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটাতে পারবো।

উপজেলা আ'লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কুলাউড়ার মানুষ শান্তি চায়, সন্ত্রাস চায়না।

মেয়র বলেন, আমরা ২২ বছরের গ্লানি মুক্ত হয়েছি। বঞ্চিত হওয়ার ইতিহাস আমরা এবার মুছে দিতে চাই।

চা শ্রমিক রামলাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা কেবল এমপি পাল্টিয়েছি। ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ থাকলেও আমাদের এমপিরা ছিলেন সরকারের বিপরীতে। তারা ইচ্ছে করে কুলাউড়ার মানুষকে উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রেখেছেন। কুলাউড়ায় উন্নয়ন আনতে হলে দরকার সরকার দলীয় একজন এমপির। আর দীর্ঘ ২২ বছর পর এবার দলীয় প্রার্থী এবং দলের প্রতীক আমরা কুলাউড়ায় পেয়েছি। এটা আমাদের কুলাউড়ার জন্য বিশাল সুযোগ করে দিয়েছে।। এই সুযোগ আমাদের হাতছাড়া করিনি।'

এ আসনে কেন্দ্রের মনোনীত প্রার্থীকে তৃণমূল গ্রহণ করে না, যদি তাদের প্রার্থী পছন্দ না হয়। এমন সমীকরনের দোলাচলে বিগত প্রায় ৩০ বছর ধরে চলে আসছে। তবে এবার দ্বাদশ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সাধরাণ ভোটারদের কাছে আ’লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার চেয়ে ‘ব্যাক্তি নাদেল’ এর গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে বেশি।

দ্বাদশ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, নাদেলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম সফি আহমদ সলমান (ট্রাক) পেয়েছেন ১৫ হাজার ৫শ ৫২ ভোট। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক এমপি এম এম শাহীন পেয়েছেন ১১ হাজার ৪শ ৪৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল মতিন (কাঁচি) পেয়েছেন ৬শ ৬৮ ভোট, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল মালিক পেয়েছেন ৫শ ৬৫ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা আসলাম হোসাইন রহমানী পেয়েছেন ৩শ ৬৬ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এনামুল হক মাহতাব পেয়েছেন ৩শ ৫ ভোট ও বিকল্পধারার প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান সিমু পেয়েছেন ১শ ৬১ ভোট।

শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল : শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ছাত্রলীগের রাজনীতি করে ধীরে ধীরে ওঠে এসেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। ১৯৮৬ সালে তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হন। পরবর্তীতে সিলেট সরকারি কলেজ এবং এমসি কলেজে পড়াকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন তিনি। পরে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হন। ১৯৯৩ সালে তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯৭ সালে হন সভাপতি। এরপর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগে শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হন নাদেল। ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের পর তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের গ্রামের বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার কৌলায়।

রাজনীতি,নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close