• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

জনগণকে কবর দিয়ে আ.লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায়: রিজভী

প্রকাশ:  ০৬ মে ২০২৪, ১৮:৫০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

শেখ হাসিনা সরকার গোটা জনগণকে কবরস্থ করে ক্ষমতা দখলে রাখতে চান ব‌লে মন্তব‌্য কা‌রে‌ছেন বিএন‌পির সি‌নিয়র যুগ্ন মহাস‌চিব অ্যাডভোকেট রুহুল ক‌বির রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, প্রতিদিনই জিনিসপত্র দাম বাড়ছে। মানুষ ঠিক মতো তিনবেলা খেতে পাচ্ছে না। মায়ের গর্ভ থেকে যে শিশুটা আজ জন্মগ্রহণ করছে, তার ঋণও এক লক্ষ টাকার বেশি। তারপরও শেখ হাসিনা সরকার বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে ঋণ নিতে চাচ্ছেন।

সোমবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লা‌বের সাম‌নে হাবীব উন নবী খান সো‌হেল মু‌ক্তি প‌রিষ‌দের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খা‌লেদা জিয়া, বিএন‌পির যুগ্ম মহাস‌চিব হাবীব উন নবী খান সো‌হেল, সেচ্ছা‌সেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কা‌দির ভূঁইয়া জ‌ি‌য়েলসহ সব রাজবন্দীর মিথ‌্যা মামলা প্রত‌্যাহার ও মু‌ক্তির দা‌বি‌তে এক মানববন্ধ‌নে তি‌নি এ সব কথা ব‌লেন।

‌রিজভী ব‌লেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেশি কথা বলছেন। তার কথা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি বিএনপির জন্য খুব মায়া কান্না কাঁদছেন। বিএনপির ভাবনায় উনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। মুরগির বাচ্চার জন্য চিল যেমন মায়া কান্না করে, ওবায়দুল কাদেরের কান্নাও সে রকম। তিনি মাঝে মাঝে আওয়াজ দেন, বিএনপি নাকি দুর্বল হয়ে গেছে। বিএনপি ক্লান্ত, হতাশ এবং নেতারা সবাই বিদেশ চলে যাচ্ছেন। ঘটনা কিন্তু উল্টো, তারা যে ভিতর থেকে ধ্বসে গেছে, ভেঙে গেছে-সেটা চাপা দেওয়ার জন্যই তিনি এসব কথা বলছেন।

এ সরকার বারবার জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের মালিকানা ছিনিয়ে নিচ্ছে। আর এই কারণে তাদের জনসমর্থন নেই। কয়েকজন সুবিধাবাদী, ঋণ খেলাপি এবং বাজার সিন্ডিকেটের লোকজন আওয়ামী লীগকে ঘিরে আছে। যারা বাজার সিন্ডিকেট করে দ্রব্যের দাম বাড়ায়, যারা ব্যাংক লুটপাট করে টাকা বিদেশে পাচার করে, তারা সবাই গণশত্রু।

রিজভী বলেন, তাদের সাথে তো দেশের জনগণ থাকে না। তারাই যদি এই সরকার এবং শেখ হাসিনার সাথে থাকে তাহলে তো তারা জনগণের সমর্থন পাবে না। জনগণের সমর্থন পাবে না জেনে তারা এখন ফাঁকা বুলি মারছে। টিনের বক্সে যদি মুড়ি না থাকে, তাহলে সেই টিন যেমন ঝনঝন করে বেশি- তেমনি আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন।

উপজেলা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা আবার একটি দামি নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজন যাতে না দাঁড়ায়, সেজন্য কেন্দ্র থেকে নিষেধ করেছে। তারপরও মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনরা দাঁড়িয়েছে এবং তারা বলছে প্রধানমন্ত্রীর তো ২০-২৫ জন আত্মীয়-স্বজন আছে। তারা যদি দাঁড়ায় দাঁড়াতে পারে তাহলে আমরা বাদ যাব কেন?

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সাজানো এই উপজেলা নির্বাচনে জনগণ তো যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কারণে অন্য কেউ চান্সই পাচ্ছে না। অধিকাংশ আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী-আত্মীয়স্বজন এবং ব্যবসায়ীরা নমিনেশন কিনেছে। দলের সংকট হলে তারা তো থাকবে না কিন্তু তারাই এখন দখল করে আছে।

রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনার দল যে শূন্য মুড়ির টিন হয়ে গেছে, সেই টিন আগে ভরেন, তারপর বিএনপিকে নিয়ে কথা বলুন। বিএনপি দুর্বল নাকি হতাশ এটা তো টের পান প্রতি মুহূর্তে। বিএনপিকে মোকাবিলা করার সাহস আওয়ামী লীগের নাই, এজন্যই পুলিশ দিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জনগণকে দমন করে এত জোর গলায় আজ কথা বলছেন।

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভাঙা কলসি বাজে বেশি। আপনাদের আওয়ামী লীগ এখন ভাঙা কলসি। তাই আপনারা বাজছেন বেশি করে। জনগণকে যা দেখিয়েছেন, যা বলেছেন, সব মিথ্যা। এইবার বাজেটে লাখ কোটি টাকার ঋণ চাচ্ছেন কেন? জনগণের গলায় পাড়া দিয়ে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল বাড়াচ্ছেন কেন? আজ দেশে গণতন্ত্রের শাসন নাই বলে, বৈধ সংসদ নাই বলে আপনারা জনগণের টুঁটি চেপে ধরে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি থেকে বেশি বিল নিচ্ছেন।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুণীর হত্যার বিচার বিষয়ে তিনি বলেন, সাগর-রুণীর হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন আজ পর্যন্ত জমা দিতে পারেনি। ১০৯ বার এই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার পরেও জমা দিতে পারেনি, তারিখ শুধু পিছাচ্ছে। সাংবাদিক দম্পতির ভয়ংকর হত্যার বিচার এখন পর্যন্ত করতে পারেননি। কেন পারেননি এটা দেশের জনগণ জানে। এরকম একটি ঘটনা নিয়ে অমীমাংসিত নামের একটি সিনেমা করা হয়েছিল, সেটা সেন্সর থেকে আটক করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীতে যত চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনা ঘটেছে সবগুলোরই সিনেমা হয়েছে। সেন্সর বোর্ড এতটাই মূর্খ যে তারা বলেছে এই মামলা বিচারাধীন আছে। এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনই জমা দেওয়া হয়নি অথচ তারা বলছে এটার মামলা চলমান এই কারণে আমরা মুক্তি দিতে পারলাম না। কত মূর্খ তারা। অর্থাৎ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ক্ষমতাবানরা জড়িত এই কারণে ওইটা আড়াল করতে চাচ্ছে সবাই মিলে।

তিনি বলেন, এই সরকার কথিত পক্ষেই ব্যর্থ সরকার। ষড়যন্ত্রকারী সরকার। এই সরকার এদেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে আসেনি। আমাদের অসুস্থ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রাখা হয়েছে একেবারে সাজানো মামলায়। এমনকি তার উন্নত চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে রাখা হয়েছে। তারপরও তিনি এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, জনগণকে তার মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

ঢাকা মহানগর দ‌ক্ষি‌ণ সেচ্ছা‌সেবক দ‌লের সা‌বেক সধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম নো‌মা‌নের সভাপ‌তি‌ত্বে মানববন্ধ‌নে আরও বক্তব‌্য রা‌খেন বিএন‌পির সেচ্ছা‌সেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, ছাত্রদ‌লের সাধারণ সম্পাদক না‌সির উ‌দ্দিন না‌সির, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, সাদরুজ্জামান, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।

বিএন‌পি,রুহুল ক‌বির রিজভী,আ.লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close