• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

শারদীয় দুর্গোৎসব

মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫৭ | আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে রাজধানীর পুরান ঢাকার মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। দেবী দুর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মীকে আকৃতি দিতে ঘাম ঝরাচ্ছেন তারা।

শবিার (১৪ অক্টোবর) শুভ মহালয়া, চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে দেবী দুর্গাকে।

জানা গেছে, এ বছরের মহালয়ার অমাবস্যাতেই রয়েছে গ্রহণ। ১৩ অক্টোবর তারিখে (শুক্রবার) অমাবস্যা মুহূর্ত শুরু হবে রাত ১০টায় এবং অমাবস্যা মুহূর্ত শেষ হবে ১৪ অক্টোবর রাত ১১টা ২০ মিনিটে।

সনাতন ধর্মাবলম্বী পণ্ডিতরা জানান, আগামী ২০ অক্টোবর (২ কার্ত্তিক) শুক্রবার। মহাসপ্তমী পড়ছে আগামী ২১ অক্টোবর (৩ কার্ত্তিক) শনিবার। মহাষ্টমী পড়ছে আগামী ২২ অক্টোবর (৪ কার্ত্তিক) রবিবার। সন্ধিপুজো সন্ধ্যা ৪.৫৪-তে শুরু। শেষ হবে রাত ৫:৪২-এর মধ্যে। সন্ধ্যা ৪:৫৪ গতে সন্ধিপুজো শুরু। সন্ধ্যা ৫:১৮-র মধ্যে সেরে নিতে হবে বলিদান। রাত ৫:৪২-এর মধ্যে সন্ধিপুজোর সমাপ্তি। মহানবমী পড়ছে আগামী ২৩ অক্টোবর (৫ কার্ত্তিক) সোমবার। বিজয়া দশমী পড়ছে আগামী ২৪ অক্টোবর (৬ কার্ত্তিক) মঙ্গলবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরান ঢাকার বাংলা বাজার, শাঁখারী বাজারে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রতিমা শিল্পী আর সহযোগীরা মিলে বানাচ্ছেন প্রতিমা। মাটি আর খড় পানি দিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে এসব প্রতিমা। এরপর এতে দেওয়া হয় রঙ।

শারদীয় দুর্গাপূজায় এক সেট প্রতিমার জন্য দেবী দুর্গা ও তার চার সন্তান- সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মীকে বানানো হয়ে থাকে। পাশাপাশি থাকে অসুর, সিংহ, হাঁস, প্যাঁচা ও সাপ।

বাংলা বাজার শিরিস দাস লেনের বল্লভ জিঁউ মন্দিরে বানানো হচ্ছে ১২টি দুর্গাপূজার সেট। সেখানে কাজ করছেন বলাই চন্দ্র চন্দ্র পাল। তিনি বলেন, এ বছর ১২টি কাজের অর্ডার পেয়েছি। বেশিরভাগ ঢাকার বিভিন্ন পূজামণ্ডপের। ঢাকার বাইরে থেকে দু’টি অর্ডার পেয়েছি। পূজার জন্য সাধারণত তিন মাস আগে থেকে কাজ শুরু করতে হয়। আমার প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ, এখন শুধু রঙ দিয়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পালা।

‘করোনার পর মাটি-খড়ের দাম বেড়ে গেছে। এখন প্রতি সেট প্রতিমার জন্য ৭০ হাজার টাকা নেই। দাম নির্ভর করে প্রতিমার ছোট-বড় ও ডিজাইনের ওপর।’

এসময় পাশে বসে দেবী দুর্গাকে সাজাচ্ছিলেন নিতাই পাল। তিনি বলেন, এ পেশায় কাজ করে পূজার উৎসবের সময়ই শুধু আনন্দ। সারাবছর তেমন কাজ থাকে না। বাকি দিন কষ্ট করে চলতে হয়। তরুণরা আসতে চান না এ পেশায়। আমরা যারা আগে থেকে শিখেছি তারাই প্রতিমা বানাচ্ছি।

শাঁখারী বাজারে শিমুলিয়া শিল্পালয়ের পল্টন পাল বলেন, আমাদের দোকান ছোট। দুই-তিনজন মিলে কাজ করি। এখন দুর্গাপূজায় কাজ কম। তবে বছরের অন্যান্য সময় সরস্বতী পূজা, কালী পূজা, অন্যান্য পূজার জন্য প্রতিমা তৈরি করি।

শাঁখারী বাজারের প্রতিমা শিল্পী হরিপদ পাল। তিনি ৩০ বছর ধরে এ পেশায় জড়িত। তিনি বলেন, অসুস্থ হয়ে গেছি। এখন আর আগের মতো কাজ করতে পারি না। অনেক অর্ডার আসে, কাজ করার সেই শক্তি নেই। দু’জন সহযোগী নিয়ে কাজ করছি। এবার নিজেদের পূজামণ্ডপের জন্য, আর লক্ষ্মীবাজারের একটি মণ্ডপের জন্য বানাচ্ছি।

হরিপদ পাল বলেন, অন্যান্য জিনিসের মতো খড়-মাটির দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন খরচ বেড়েছে। এছাড়া প্রতিমা তৈরির কাজ এখন কেউই শিখতে চায় না। এ পেশায় কাজের অভাব। দুর্গাপূজা ছাড়া বছরের অন্যান্য দিন শিল্পীদের বসে থাকতে হয়।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

শারদীয় দুর্গোৎসব,শিল্পী,ব্যস্ত,মণ্ডপ,প্রতিমা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close