যে কারণে মোস্তাফিজের ওপর ক্ষুব্ধ সুজন
টেস্টকে না বলে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলতে যাওয়ায় কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর রেগে আগুন হয়ে আছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
জৈব সুরক্ষার বলয়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন- এ ধরনের কথা জানিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরতি চেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। মূলতঃ টেস্ট খেলার প্রতি আগ্রহ দেখাননি বলেই তাকে টেস্টের চুক্তিতে রাখা হয়নি গত দুটি বছর। যদিও এখন এই বাঁ-হাতি কাটার মাস্টারকে টেস্টে ফেরাতে চায় বিসিবি; কিন্তু মোস্তাফিজ আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি বেছে বেছে খেলতে চান, অর্থাৎ টেস্ট খেলতে চান না।
সম্পর্কিত খবর
জাতীয় দলের হয়ে খেলতে এমন অনীহা প্রকাশ করার কারণেই মূলতঃ তার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন আজ বিসিটির টিম ডিরেক্টর। টেস্টকে ‘না’ বলার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে ক্ষুব্ধ সুজন বলেন, মোস্তাফিজের আসলে বয়স কতো? কতোদিন ধরে খেলে? ও তো সাকিব না, তামিম না, মাশরাফি বা মুশফিক না, যারা এতো বছর ধরে বাংলাদেশকে তিন ফরম্যাটে সার্ভিস দিয়েছে। দেশের জন্য খেলা জরুরি।
তিনি বলেন, টেস্টের মতো বুনিয়াদি ক্রিকেট তো আর কিছুই হতে পারে না। আলোর ঝলকানি, টাকাপয়সা হয়তো সাদা বলের ক্রিকেটে বেশি; কিন্তু লাল বলের ক্রিকেট তো বনেদি খেলা। ক্রিকেট শুরু হয়েছে টেস্ট দিয়ে। মোস্তাফিজ কেন খেলতে চায় না আমি জানি না।
সুজন বলেন, টি-টোয়েন্টি এমন একটা খেলা, এখানে কী পাবেন আসলে? ৪ ওভারে ৪০ রান দিবেন একদিন, ৪ ওভারে ২০ রান দিবেন একদিন ৩ উইকেট পাবেন, টেস্ট দিয়েই তো ক্রিকেট শুরু হয়েছে।
মোস্তাফিজের অবশ্যই টেস্ট খেলা উচিৎ জানিয়ে তিনি বলেন, সাকিব-তামিমদের বয়স ৩৪-৩৫ বছর। তাদের এখন বিরতি প্রয়োজন, তারা এটার যোগ্য। কিন্তু লিটন দাস তো বিশ্রামের যোগ্য না। লিটন যদি সাকিব-তামিম হতো, বলতাম সেও বিশ্রামের যোগ্য। মুস্তাফিজের অবশ্যই টেস্ট খেলা উচিৎ। এখন তার পিক টাইম। আমরা তো বলছি না সব টেস্ট খেলো। আমি চাই বছর ৬-৮টা টেস্ট ম্যাচ বছরে তার খেলা উচিৎ।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন মোস্তাফিজ। লাল বলের খেলা থেকে দূরে থাকতে চাওয়ার কারণেই মূলতঃ তাকে রাখা হয়নি টেস্টের চুক্তিতেও। যদিও সম্প্রতি তাকে টেস্টে ফেরানোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ চলতি মাসেই। ঘরের মাঠে মোস্তাফিজের সাফল্য আর চোট জর্জরিত পেস বোলিং ইউনিটের ভাবনা থেকে বিসিবি কর্মকর্তারা বাঁ-হাতি এই পেসারকে টেস্ট স্কোয়াডে চেয়েছেন। যদিও মোস্তাফিজকে ছাড়াই ঘোষণা করা হয়েছে প্রথম টেস্টের দল। কারণ, তিনি এখন খেলছেন আইপিএল।
টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, আইপিএলে কয়টা ম্যাচ খেলেন? ৬টাই ধরলাম। খালেদ, এবাদত, তাসকিন, শরিফুল দুই টেস্টের চার ইনিংসে হয়তো ৬০ ওভার করে বল করে। ওয়ার্কলোড তো একই হচ্ছে! আপনি কোথায় বেশি ওয়ার্কলোড নিচ্ছেন? আপনি তো আইপিএলই বেশি খেলেন, আর তো কিছু বেশি খেলেন না। যুক্তির কথায় যদি আসি, ওয়ার্কলোড কোথায় বেশি আসে? আপনি আইপিএল খেলতে যাবেন, যেটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য কোনোভাবেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। আপনি বিসিবির অধীনে খেলেন, দেশের খেলায় মনোযোগ দিতে হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম