• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

অন্যরা পরিবর্তনের পথে হাঁটলেও ‘নীতিতে’ অটল বিসিবি

প্রকাশ:  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:০৫ | আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:২৪
স্পোর্টস ডেস্ক

বোর্ড কর্তাদের প্রাণের সখা- ‘সিনিয়র দলের নির্বাচক প্যানেল’। কর্তাদের পরাণ যাহা চায় তারা তাই, এর বাইরে যাই ঘটে যাক তার খবর নাই। প্রায় এক যুগ দায়িত্বে অথচ অর্জন ক্যালকুলেশন করতে গেলে সেটা আসবে ‘বিগ জিরো’। পেশাদার দায়িত্বে যখন পারফর্ম্যান্সই শেষ কথা, তখন তা সিলেকশন প্যানেলের ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়।

মিরপুরের উইকেট আর জাতীয় দলের সিলেকশন এতোটাই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ যে আপনি এর আগা-মাথা বুজতে চাইলে, যা বুজেন তাও ভুলে যেতে পারেন। ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত যখন দলে, তখন মাত্র এক ম্যাচ খেলিয়েই পারভেজ ইমনের শেষ দেখে ফেললেন সিলেক্টররা। এটাই এখানে সাইন্স।

দল নির্বাচনে পক্ষপাত দুষ্টতা চোখে পড়েছে সেটা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে এবং সেই বিতর্ক সত্য। তবে এই দলটাকে যারে সিলেক্ট করেন সিলেক্টরের ভূমিকায় যারা, তাদের ব্যাপারেও কিন্ত মোটামুটি পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট। দীর্ঘ সময় ধরে তারা সেই চেয়ারগুলো দখল করে রয়েছেন। বিশ্বের অন্য কোনো ক্রিকেট বোর্ডে এমনটা চোখে পড়বে না এবং এই যে দীর্ঘ সূত্রতা এগারো-বারো বছর ধরে একটা পদে রয়েছেন এই সময়টার মধ্যে বাংলাদেশের ক্রিকেটে তারা দিয়েছেনটা কি সেই প্রশ্ন করার কেউ নেই। কারণ তাদের মুখে তালা, উপর থেকে যাই বলা হয় সেই কথাটাই তারা সুন্দর করে মেনে নিতে পারেন। এমন সিলেকশন প্যানেল আর কতো দিন?

বিশ্ব ক্রিকেট কীভাবে এগুচ্ছো তাতে খুব একটা যায়-আসে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। ২০১৬ সালে ফারুক আহমেদ দায়িত্ব ছাড়ার পর প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব ওঠে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর কাঁধে। একই সময়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো হাবিবুল বাশারকেও। সবশেষ ২০২১ সালে নান্নু ও বাশারের সঙ্গে নির্বাচক হিসেবে যুক্ত হন আব্দুর রাজ্জাক। তিনজনে মিলে দীর্ঘ সময় ধরে সামলাচ্ছেন দায়িত্ব।

উল্লেখিত সময়ে পৃথিবীর সব বোর্ড পরিবর্তনের পথে হাটলেও বিসিবি তার নীতিতে অটল। নির্বাচকেরা জানেন যতো সমালোচনাই হোক দিন শেষে কিছুই হবে না। যেখানে পারফর্ম করলে পদ ধরে রাখা যায়, সেখানে তারা এ প্লাস ক্যাটাগরিতে। অন্য ক্রিকেট বোর্ডগুলো অবশ্য বোকা আর ব্যাকডেটেড।

টিম ইন্ডিয়ার পাইপলাইনে ক্রিকেটারের ঘাটতি নেই, তারপরও ২০২০ সালের শেষে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড বা বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) নতুন সিলেকশন প্যানেলকে দায়িত্ব দেয়। মজার ব্যাপার চিরপ্রতিদ্বন্ধী পাকিস্তানও একই সময়ে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে মিসবাহ-উল-হকের পরিবর্তন করে।

২০২১ সালে নতুনদের দায়িত্ব দেয় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট, এশিয়া কাপে যার ফল পেয়েছে হাতেনাতে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড পরিবর্তনের পথে হাটলেও সেই ভুল করতে রাজি নয় বিসিবি। যে ক্রিকেটার দলে সুযোগ পেয়ে পারফর্ম করতে পারে না তাকে তুলোধুনো করা হয় অথচ সিলেক্টররা যে ‘ফুল’ সিলেকশন করছেন তার মূল্যায়ন হয় না।

ক্রিকেটার খুজে পেতে ব্যর্থ নির্বাচক প্যানেল আর বিসিবি ব্যর্থ নতুন নির্বাচকের খোঁজ পেতে। আসলেই সেই চেষ্টাটা আদৌ করে কি কেউ? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে না তবে একটা ব্যাপার পরিষ্কার ‘কে হায় রিদয় খুড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে?’ যা আছে তাই ভালো, নির্বাচক খোঁজাখুজি করে বিসিবি বেদনা আমদানি করতে চায় না।

মাসখানেক আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) এক সাধারণ সভা শেষে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, আমাদের সভার একটি আলোচ্য বিষয় ছিলো জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল। তো এখন আমাদের প্যানেলে তিনজন আছেন। আমরা ক্রিকেট অপ্সকে বলেছিলাম নতুন কারো নাম সুপারিশ করতে। তারা সেটি করতে পারেনি, নতুন কাউকে এ দায়িত্বের জন্য খুঁজে পায়নি।

তিনি বলেন, এখন যেটা হয়েছে, আমাদের অনেক খেলা। বয়ঃভিত্তিক ক্রিকেটেও যে খেলাগুলো হয় সবগুলো তাদের (বর্তমান প্যানেল) পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের জাতীয় দলের খেলাই এতো। সেজন্য আরো দু’জনকে আমরা অন্তর্ভুক্ত করবো।

বর্তমানে যে তিনজন নির্বাচক প্যানেলে রয়েছেন তাদের আগামী বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্ব বহাল রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বোর্ড থেকে। এ নিয়ে পাপন বলেন, তবে অপারেশন্স থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, বর্তমান প্যানেলের মেয়াদ আগামী বছরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হোক। এর মধ্যে আমরা কিছু একটা ব্যবস্থা করবো। তো এর সঙ্গে শুধু যুক্ত হয়েছে, আরো দু’জন নির্বাচক বাড়ানো হবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

বিসিবি,নীতি,পরিবর্তন,মিরপুর,উইকেট
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close