• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে টাইগারদের সিরিজ হার

প্রকাশ:  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:৫৮
স্পোর্টস ডেস্ক

বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১৫ বছর পর ঘরের মাটিতে ব্ল্যাক ক্যাপসদের কাছে ওয়ানডে সিরিজ খোয়াল লাল-সবুজের দল। ২০০৮ সালে সর্বশেষ দেশের মাটিতে কিউইদের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিলো টাইগাররা।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মিরপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারীরা। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে কিউইরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিলো।

সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামায় টাইগারদের সামনে ব্যাটিং অনুশীলনের ভালো সুযোগই ছিলো। তবে কিউইদের বিপক্ষে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তর একাকী লড়াইয়ে ৩৪.৩ ওভারে ১৭১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশের ইনিংস উদ্বোধন করেন অভিষিক্ত জাকির হাসান। তবে জাতীয় দলে নিজের অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি এই ব্যাটার। অ্যাডাম মিলনের করা দ্বিতীয় ওভারে ৫ বলে মাত্র ১ রান করে বোল্ড হন জাকির।

আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমও অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ট্রেন্ট বোল্টের করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে স্লিপে ফিন অ্যালেনকে ক্যাচ দেন মাত্র ৫ রান করা এ বাঁহাতি ব্যাটার।

প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু প্রতিভাবান এই তরুণ ব্যাটারও ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হন। ষষ্ঠ ওভারে অ্যাডাম মিলনের বলে পয়েন্টে উইল ইয়াংয়ের সহজ ক্যাচ হন হৃদয়। তিনি ১৭ বলে তিন চারে করেন ১৮ রান।

দলীয় ৩৫ রানে তিন উইকেটের পতনের পর দলের হাল ধরেন বাংলাদেশের ১৬তম ওয়ানডে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও উইকেটরক্ষন মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ উইকেটে দু’জন মিলে যোগ করেন ৫৩ রান।

১৫ ওভার শেষে পানিপানের বিরতি শেষে প্রথম বলের মুখোমুখি হয়েই বিদায় নিলেন মুশফিকুর রহিম। লকি ফার্গুসনের বলে বোল্ড হন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে দুই ছক্কায় ১৮ রান করেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।

অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েই অর্ধশতক করা শান্তকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ২৫তম ওভারে ইশ সোধির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এই ব্যাটার। ২৭ বলে ২ চারে ২১ রান করেন রিয়াদ। শান্তর সঙ্গে তার ৪৯ রানের জুটি ভাঙলে ১৩৭ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর আর কেউই শান্তকে উপযুক্ত সঙ্গ দিতে পারেননি। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বলে ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হয়ে মেহেদী হাসান বিদায় নেন টম ব্লান্ডেলের গ্লাভসে ধরা পড়ে। তার আগে ১৪ বলে ১৩ রান করেন মেহেদী।

অধিনায়ক লিটন দাস বিশ্রামে থাকায় ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব পান শান্ত। ২০০৯ সালে মোহাম্মদ আশরাফুলের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো অধিনায়ক হিসেবে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন শান্ত। আর নেমেই বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করেন শান্ত। ২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে মোহালিতে ভারতের বিপক্ষে বুলবুলের করা ৭০ রান ছিলো সর্বোচ্চ।

তবে ইনিংসের ৩২তম ওভারে শান্তের উইকেট তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। কোল ম্যাককনচির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন এই বাঁহাতি ব্যাটার। শান্ত রিভিউ নিলেও তা কোনো কাজে আসেনি। আউট হওয়ার আগে ৮৪ বলে ১০ চারে ৭৬ রান করেন তিনি। টপ অর্ডারের অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতার মিছিলে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম।

দলীয় ১৬৭ রানে শান্তের বিদায়ের পর বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। মাত্র তিন রানের ব্যবধানে একে একে হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম আউট হলে ১৭১ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।

নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে অ্যাডাম মিলনে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া ট্রেন্ট বোল্ট আর কোল ম্যাককনচি নেন দু’টি করে উইকেট।

১৭২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা দারুণ হয়েছিলো। মাত্র ৯ ওভারেই ফিন অ্যালেন ও উইল ইয়াংয়ের উদ্বোধনী জুটিতে উঠে যায় ৪৯ রান। তবে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আচমকা দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে সফরকারীরা।

শরিফুল ইসলামের করা দশম ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিড উইকেটে নাসুম আহমেদের হাতে ক্যাচ দেন অ্যালেন। আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ২৮ রান করেন এই কিউই ওপেনার। পরের বলেই অভিষিক্ত ডিন ফক্সক্রফটকে বোল্ড করেন শরিফুল।

দলীয় ৪৯ রানে পরপর দুই বলে উইকেট হারিয়েও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায়নি নিউজিল্য়ান্ড। হেনরি নিকোলসকে সঙ্গে নিয়ে কিউইদের জয়ের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন ইয়াং। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে সফরকারীদের স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৮১ রান।

অবশেষে ৩০তম ওভারে অবশেষে ইয়াং-নিকোলসের জুটি ভাঙে। স্পিনার নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন ইয়াং। আউট হওয়ার আগে ৮০ বলে ১০ বাউন্ডারি ও এক ছক্কাতে ৭০ রান করেন ডানহাতি এ ওপেনার। পঞ্চম অর্ধশতক তুলে নেওয়া ইয়াংয়ের বিদায় অবশ্য নিউজিল্যান্ডের জয়টাকে শুধুমাত্র বিলম্বিতই করেছে। চতুর্থ উইকেটে নিকোলস ও উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রানের জুটিতে ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। নিকোলস ৫০ রানে এবং ব্লান্ডেল ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

হার,সিরিজ,টাইগার,বিশ্বকাপ,বাংলাদেশ,নিউজিল্যান্ড
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close