• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়েও বকেয়া বিলের মামলায় কারাগারে দিনমজুর

প্রকাশ:  ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:০৫
মাছুম কামাল, কুমিল্লা

তেল ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়ে রাতে ঠিকমত বাতিই জ্বালান না দিনমজুর আব্দুল মতিন (৪৫)। অথচ, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখার মামলায় তিনিই আজ কারাগারে। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী আব্দুল মতিন ওই গ্রামের মৃত অহিদ আলীর ছেলে। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার পরও গত ১৭ মাস বকেয়া বিল না দেওয়ার মামলায় তাকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়েছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। আজ (১৭ এপ্রিল) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মোচাগড়া গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মোট ২৫৬টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৪ বছর আগে কুমিল্লা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এ আবেদন করেন। আবেদনের পর স্থানীয় দালাল আবুল কালাম আজাদ ও আবুল বাসার প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে মিটার প্রতি ১৫ হাজার টাকা করে আদায় করে। ওই সময় ভুক্তভোগী মতিন মিয়াও আবেদন করেন এবং কর্তৃপক্ষও সংযোগের অনুমোদন দেয়।

কিন্তু মতিন মিয়া দালাল চক্রকে চার হাজার টাকা দেওয়ার পর বাকি টাকা দিতে পারেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চাতুরির আশ্রয় নেয় দালালরা। মতিন মিয়ার অজান্তে কৌশলে তার আবেদনে একই এলাকার মৃত আব্দুস ছামাদের ছেলে সফিকুল ইসলামের ছবি লাগিয়ে দিয়ে সফিকুলের কাছ থেকেও টাকা নেয় তারা। এদিকে মতিন মিয়ার নামে মিটার বরাদ্দ হলে তাকে না জানিয়ে ২০১৫ সালের ২২ মার্চ সে মিটারের সংযোগ দেওয়া হলে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সফিকুল।

জানা যায়, বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও মিটারটির ব্যপারে মতিন মিয়াকে কিছুই জানাননি তিনি।

প্রথম দিকে মতিনের নামেই সফিকুল মিটারের বিল জমা দিলেও গত ১৭ মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছে। এতে কুমিল্লা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চান্দিনা অফিসের এজিএম লক্ষণ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে মিটারের অনুমোদন পাওয়া মতিন মিয়ার নামে একটি বকেয়া বিলের মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে মুরাদনগর থানার এসআই কবির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আব্দুল মতিনকে গ্রেফতার করে এবং বুধবার দুপুরে তাকে কুমিল্লা আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলম পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ‘একটি মামলায় মতিন মিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে কুমিল্লা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হাবিবুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ‘আব্দুল মতিনের নামের মিটারে সফিকুল ইসলামের ছবি থাকার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। মামলা হওয়ার আগে মতিন মিয়া নোটিশ পেয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আজ এ ঘটনা ঘটতো না। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।’


পিবিডি/এসএম

কুমিল্লা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close