নুসরাত হত্যাকাণ্ড: জাবেদ ও পপিকে আদালতে উপস্থাপন
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের এজহারভুক্ত আসামি জাবেদ হোসেন ও জড়িত থাকার অভিযোগে আটক উম্মে সুলতানা পপি (শম্পা) কে আদালতে উপস্থাপন করেছে পিবিআই।
এর আগে এ দুজনই রিমান্ডে ছিলো। জাবেদ ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। অপরদিকে উম্মে সুলতানা পপিকে ১০ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে আটক করা হয়। এরপর ১১ এপ্রিল সুলতানা পপিকে ৫ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়।
সম্পর্কিত খবর
এ দুই আসামির রিমান্ড শেষে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক শাহ আলম তাদের আদালতে উপস্থিত করার তথ্য নিশ্চিত করেন।
তবে তাদের জন্য নতুন করে রিমান্ড আবেদন করা হবে না তারা দুজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিবেন সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করেননি।
এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ায় এজহারের আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এ দুইজনের নাম উল্লেখ করেন। তারা জানায় জাবেদ ও পপি সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ গ্রহণ করে। জাবেদ নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় আর পপি হাত-পা চেপে ধরে ওড়না দিয়ে বেধে ফেলে। এসময় তাদের সাথে আরো তিনজন ছিলো। নুসরাতের হত্যাকাণ্ডের দিন পপিকে পরিচয় গোপন করে শম্পা নামে ডেকেছিল হত্যাকারীরা। নুসরাত মৃ্ত্যু শয্যায় জবানবন্দিতে এ শম্পার নাম উল্লেখ করেছিল।
উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী সহপাঠি নিশাতকে ছাদের উপর কেহ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়।
সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত এজহারের ৮ জন গ্রেফতারসহ মোট ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৪ জন। ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেয়া হয়।
এর আগে ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নীপিড়নের অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।