• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ফেনীতে স্কোয়াশ চাষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর বাজিমাত

প্রকাশ:  ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:২৮ | আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৩৩
ফেনী প্রতিনিধি

করোনার প্রভাব ঠেকাতে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাঝে মধ্যে অনলাইন ক্লাস থাকলেও, বাকি সময় হেলায়-ফেলায় কাটাচ্ছেন বহু শিক্ষার্থী। ব্যতিক্রম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ছাত্র ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার কাউসার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অলস সময় না কাটিয়ে অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি অবসর সময় মধ্যপ্রাচ্যের সবজি স্কোয়াশ চাষ করে দারুণ সফলতা পেয়েছেন তিনি। প্রতিদিন অসংখ্য উৎসুক জনতা নতুন এ সবজি ক্ষেত দেখতে এবং সংগ্রহ করতে ভিড় জমাচ্ছেন তার বাগানে। তার দেখাদেখি অন্যরাও ঝুঁকছেন স্কোয়াশ চাষে। বর্তমানে তার ক্ষেতে বিষমুক্ত স্কোয়াশের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে নতুন হলেও চাহিদা থাকায় স্কোয়াশ সবজির ভালো দাম পাচ্ছেন তিনি।

কাউসার জানান, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেকার সময় কাজে লাগাতে তিনি তার আপন সহোদর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নুরুল আফছারসহ পরামর্শ করে নিজেদের পারিবারিক পতিত জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন, সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক বিদেশি এ সবজি আবাদের সিদ্ধান্ত নেন।

সোনাগাজী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে নিজের পৈতৃক ভিটায় প্রথমে প্রায় ১৫ শতাংশ জমিতে স্কোয়াশ চাষ করে গত বছর অর্ধ লক্ষাধিক টাকা আয় করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী মো. শহিদুল্লাহ কাউসার। গত বছর লাভবান হওয়ায়, চলতি বছরও তিনি ৩০ শতক জমিতে দুই প্রজাতির স্কোয়াশ সবজি চাষ করেন।

স্কোয়াশ দেখতে শসার মতো। কুমড়া জাতীয় শীতকালীন এই সবজি অতি পুষ্টিকর, সুস্বাদু, স্বল্পমেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল ও লাভজনক। শীতকালীন এই সবজি আবাদ করে মাত্র দুই মাসেই করা যায় প্রচুর লাভ। তার এই চাষের ফলে জেলার কৃষিতে যোগ হলো আরেকটি নতুন সবজি স্কোয়াশ। স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। এটি ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। এটি শসার মতো লম্বা হলেও রং মিষ্টি কুমড়ার মতো। উচ্চ ফলনশীল জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের তরকারিতে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

শহিদুল্লাহ কাউসার জানান, স্কোয়াশ আবাদের সুবিধা হচ্ছে অল্প সময়ে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে ফসল উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ কুমড়া লাগানো যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ স্কোয়াশ লাগানো সম্ভব। পূর্ণবয়স্ক একটি স্কোয়াশ গাছ অল্প জায়গা দখল করে। স্কোয়াশের একেকটি গাছের গোড়ায় ৮ থেকে ১২টি পর্যন্ত ফল বের হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয় এটি।

বাজারে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। তিনি গত বছর ২০ হাজার টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন। চলতি বছর মাত্র ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন । এরই মধ্যে স্কোয়াশ বিক্রি শুরু হয়েছে। এবার লক্ষাধিক টাকার বেশি লাভ হবে বলে তিনি আশাবাদী।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা তার চাষাবাদে আগ্রহ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। এবার সোনাগাজীতে হলুদ স্কোয়াশও চাষ হচ্ছে। আগামীতে তার এরকম সফলতা তুলে ধরে উপজেলায় আমরা চাষীদের উদ্ধুদ্ধ করতে পারবো।


পূর্বপশ্চিম/এএন

স্কোয়াশ,সবজি,চাষ,শিক্ষার্থী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close