ঘুষ গ্রহণের দায়ে নির্বাচন কর্মকর্তা বরখাস্ত

প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ১৭.০০.০০০০.০৮৩.২৭.০১০.২২-৯৩ নং স্মারকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত পত্রে ওই নির্বাচন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, তৃতীয় ধাপে গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় চরভদ্রাসন উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এ নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে।

এরপর অভিযোগ তদন্তে গঠন করা হয় কমিটি। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব (সংস্থাপন-১) মো. জিলহাজ উদ্দিন ও ফরিদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান তদন্তকালে অভিযোগের সত্যতা পান। তদন্ত করে তারা তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেন নির্বাচন কমিশনে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হলো।

সাময়িক বরখাস্তের ওই আদেশপত্রে বলা হয়েছে, চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপজেলার গাজীরটেক ইউপি নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী আব্দুর রউফ ও চেয়ারম্যান প্রার্থী আহসানুল হক মামুনের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়-সংক্রান্ত অভিযোগটির সত্যতার প্রমাণ মিলেছে।

এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সোনালী ব্যাংকের চরভদ্রাসন শাখায় ২০০৯৯০১০১৪৪৫৭ নং হিসাবে নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচন চলাকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২৩ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা পাওয়ার প্রমাণ মেলে। ওই ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত টাকার সুনির্দিষ্ট উৎস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা।

আদেশপত্রে আরও বলা হয়, অভিযোগকারীদের কাছ থেকে গত ২ নভেম্বর নির্বাচন কর্মকর্তা পৌনে দুই লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করে পরের দিন (৩ নভেম্বর) তার ব্যাংকে জমাকৃত টাকার বিষয়ে অভিযোগকারীদের বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তদন্তকালে। ওই তদন্ত প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। লিখিত আদেশ এখনো পাইনি।

পূর্ব পশ্চিম/জেআর