• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

হিজড়ার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে সিলেটের ডালিম হত্যা

প্রকাশ:  ১৫ মার্চ ২০২২, ১৫:১৮
সিলেট প্রতিনিধি

হিজড়ার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে সিলেটে আলোচিত ডালিম হত্যা সংগঠিত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলার জৈন্তাপুরে নিখোঁজ হওয়া রাজমিস্ত্রী ডলিমের লাশ উদ্ধারের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ।

ফজর আলী ওরফে ফখর (৩৫) নামে এক আসামিকে গ্রেফতারের পর ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তি দেন তিনি। আদালতের বিচারক নুশরাত শারমিন তার জবানবন্দি রেকর্ডের পর কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এর আগে বিকেলে তাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জৈন্তাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম।

ফজর আলীর জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, তার কিছু গোপন তথ্য জানতো ডালিম। এটাকে ইস্যু করে টাকা আদায় করে আসছিল। তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার কথা বলে যথারীতি ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতো ডালিম। এ কারণে নিজের সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তার ভাষ্যমতে, একজন ট্রান্সজেন্ডার তথা হিজড়ার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এটাকে ইস্যু করে মাসের পর মাস টাকা নিচ্ছিল ডালিম। একপর্যায়ে তাকে পাশ কাটিয়ে চলায় তিনি ওই হিজড়াকে তার বাসার সামনে নিয়ে আসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়েন ফজর আলী। তার কাছে আরও ৩০ হাজার দাবি করেন ডালিম। ঘটনার রাতে ৫ মার্চ ৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে ফোনে ডেকে এনে তাকে ছুরিকাঘাতে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ সময় ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে নিজের হাতও কেটে যায়। হত্যার পর ডালিমের লাশ ওয়ালি সিটির একটি প্লটে পুঁতে ফেলেন।

পুলিশ জানায়, রাজমিস্ত্রী ডালিম আহমদ নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা বাচ্চু মিয়া ৬ মার্চ জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি জিডি করেন। তাতে তিনি তার ছেলে ডালিম মিয়া ৫ মার্চ থেকে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে।

৭ মার্চ উপজেলার দেও চাপরা হাওরের সাহেব আলী ওরফে তারেক হাজির পুকুর থেকে অর্ধ গলিত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সেটি ডালিমের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করে। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্থান্তর করে।

ওই রাতে ঘাটেরচটি নয়াটিলা জামে মসজিদের পাশে আরেকটি মরদেহ উদ্ধার করে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ। সিআইডির এক্সপার্ট টিম মরদেহের ফিঙ্গার প্রিন্ট যাচাই করে মৃত দেহটি ডালিমের নিশ্চিত হয়।

জৈন্তাপুর মডেল থানায় বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে একটি এবং সত্যানন্দ বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উভয় ঘটনার আসামিদের খুঁজে বের করতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (পিপিএম) দুটি টিম করে দেন।

পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা শাখার উত্তর এবং দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বিশেষ টিম গঠন করে থানা পুলিশকে সহায়তা করা হয়।

বিশেষ টিমের সদস্যরা গত ৯ মার্চ ডালিম হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ফজর আলী ওরফে ফখরকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার কর। আসামি ফখর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া ইউনিয়নের ভগতপুর কাজী গ্রামের মোসাদ্দেক আলীর ছেলে। তিনি সেনানিবাসে বাবুর্চির কাজ করতেন। গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন করেন।

পূর্বপশ্চিম/একে/এনএন

সিলেট,হিজড়া

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close