• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ছাত্রলীগনেতা কর্তৃক শিক্ষক লাঞ্ছিত, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্রকাশ:  ৩১ মার্চ ২০২২, ১৫:১৯
শরীয়তপুর প্রতিনিধি

খাবারের দাওয়াত না দেওয়ায় শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এ ঘটনার পর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছ শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগ।

বুধবার (৩০ মার্চ) শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার এ ঘটনা ঘটে।

কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মো. অরেছুল আজম বলেন, বুধবার বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা চলছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রের পরিদর্শক হিসেবে অন্য কলেজের কয়েকজন শিক্ষক সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া আমাদের সাবেক বিভাগীয় প্রধান উপস্থিত ছিলেন। তাই এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও খাবার-দাবারের আয়োজন ছিল।

তিনি আরও বলেন, এ সময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী তাদের কর্মীদের নিয়ে ৩০২ নম্বর রুমে এসে আমাকে বলে, স্যার আমাদের খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিলেন না ? তখন শিক্ষক সোহেল কয়েকবার আমার রুমে আসেন। তারা সোহেলকে বলে, আপনি বারবার এখানে এসে আমাদের কাজের ডিস্টার্ব করছেন কেন। এরপর তারা সোহেলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে সোহেলের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।

এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা উত্তেজিত হয়ে শিক্ষক সোহেলকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেছেন বিভাগীয় প্রধান মো. অরেছুল আজম।

এ বিষয়ে প্রভাষক বি এম সোহেল বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী ২০-২৫ জন কর্মী নিয়ে বাংলা বিভাগে আসে। আমাদের বলে, খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানে তাদেরকে কেন দাওয়াত দেইনি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সোহাগ আমার বিভাগীয় প্রধান মো. অরেসুল আজমের সামনে আমাকে লাথি ও কিল ঘুষি মারে। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমাকে মারতে আসলে অরেসুল আজম স্যার তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেন।

কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অলিউর রহমান ফরাজী বলেন, রাতে আমাদের বোর্ড মিটিং হয়েছে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা এ বিষয়ে পালং মডেল থানায় অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছি। তবে এখনও মামলা নেয়নি পুলিশ। কারণ, এমপি সাহেব দায়ীত্ব নিয়েছে। তিনি বলেছেন সঠিক বিচার করবেন।

এঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। তারা অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি ও কলেজ থেকে বহিস্কার দাবী করেছে। এ দাবীতে তারা আজকের পরীক্ষা বর্জন করে শ্রেণি কক্ষে অবস্থান করছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির আহ্বায়ক মহসিন মাদবর ও যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামানের স্বাক্ষরিত প্যাডে ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

সোহাগ ব্যাপারী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার মতো কোনো ঘটনা কলেজে ঘটেনি। এটা ভিত্তিহীন সংবাদ। শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার দুঃসাহস আমরা করতে পারি না। আমরা আগে ছাত্র, পরে ছাত্রলীগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর বলেন, কোনো কর্মীর কুকর্মের দায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনোই নেবে না। কোনো অযাচিত লোকের স্থান বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই।

মামলা না নেওয়ার ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, তারা যে রেজুলেশন করে এনেছে তা দিয়ে মামলা হয় না। সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত অভিযোগ দিলে আমি অবশ্যই মামলা নিবো।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসআর/জেএস

শরীয়তপুর,ছাত্রলীগ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close