• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

খুলনায় রমজানের শুরুতেই বেগুন সংকট

প্রকাশ:  ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১৯
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি বেগুনের দামের পার্থক্য ২৫ টাকা। খুচরা বাজারে সংকটের অজুহাত দেখিয়ে কেজি প্রতি ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হলেও পাইকারি বাজারের বাস্তব চিত্র দেখা গেছে পুরোটাই আলাদা। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, রমজান এলেই ব্যাবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

সরেজমিনে খুলনার বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে গত দু’দিনে বেগুনের সংকটের কথা জানিয়ে কেজি প্রতি ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হলেও প্রকৃতপক্ষে পাইকা‌রি বাজারে কোন সংকট দেখা যায়নি।

নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ কাঁচা বাজারের আতিক বাণিজ্য ভান্ডারের হিসাব রক্ষক হাসান মাহমুদ জানান, গত তিন দিন ধরে বেগুনের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে এ বেগুনের সংকট চলছে। তাছাড়া গাছের বয়স বেশি হলে এর উৎপাদন কমে যায়। আর বিভাগের সবচেয়ে বেশি বেগুনের আবাদ হয় যশোরের মনিরামপুর এলাকায়। ওখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেগুলো পাঠানো হয়।

যদিও রমজান এলেই কেন বেগুনের সংকট দেখা দেয় প্রশ্নের জবাবে তিনি চাহিদার তুলনায় স্বল্প সরবরাহের কারণে দেশব্যাপী এ পণ্যটির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়েছে বলে জানান।

একই বাজারের অপর ব্যবসায়ী শওকত আলী বলেন, দু’দিন আগেও বেগুন ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করেছেন। কিন্তু হঠাৎ বেগুনের দাম ঊর্ধ্বমু‌খি হওয়ার কারণ তিনি জানেন না। তবে শুক্র ও শনিবার তিনি এ পণ্যটি ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। চাষিরা বেগুনের দাম বাড়িয়েছে তাই তাকে এ দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। যদিও তার দাবি অনুযায়ী এর আগে প্রতিদিন পাঁচ ট্রাক বেগুন আসলেও বর্তমানে দু’ট্রাক আসার কথা জানলেও তার ঘরেই কয়েক বস্তা বেগুন দেখতে পাওয়া যায়।

এদিকে ওই বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী রমজান এলেই সাধারণ মানুষের অধিক কেনাকাটার অভ্যাসকে দায়ী করে বলেন, বাজারে কোন পণ্যের সংকট নেই। রমজান অধিক কেনাকাটার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এক টাকার মাল ১০ টাকায় বিক্রি করতে কোন দ্বিধাবোধ করছেন না। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর দাবীও জানান তারা।

সরেজমিনে নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের একাধিক কাঁচা মাল বিক্রেতারা দু’ দিনের মধ্যে এ পণ্যটির দাম হাতের নাগালে চলে আসবে জানিয়ে বলেন, আজও তারা কেজি প্রতি ৮০ টাকা দরে বেগুন বিক্রি করছেন।

পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারের পার্থক্য জানতে চাইলে তারা বলেন, সেখান থেকে ৬২ টাকায় বেগুন ক্রয় করতে হয়েছে। কেজি প্রতি আড়ৎ ভাড়া বাবদ তাদের দু’টাকা দিতে হয়। এরপর আছে লেবার ও পরিবহন খরচ। তার উপর দোকান ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল, সবমিলিয়ে এর থেকে কম দামে বিক্রি করলে তাদের বহু লোকসান হবে বলেও দাবি করেন তারা।

ডুমুরিয়ার একাধিক বেগুন চাষি বলেন, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছর বেগুনের ফলন তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে । আর বেগুনের কোনো সংকট নেই। ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কেজি প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বেগুন ক্রয় করে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করে তাদেরকে বঞ্চিত করছে ।

এব্যাপারে সরেজমিনে ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় পূর্বপশ্চিমবিডির এ প্রতিনিধির সাথে কথা হয় একাধিক ক্রেতাদের সাথে। তারা জানান, সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতেই তারা এখানে আসেন। তবে রমজানের শুরুতেই বাজারে প্রায় সকল পণ্যের মূল্য শুনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সংকটের কথা জানিয়ে পণ্যের দাম বাড়ালেও প্রকৃতপক্ষে বাজারে কোন পণ্যের সংকট নেই জানিয়ে তারা বলেন, রমজান এলেই অসাধু ব্যবসায়ীর অধিক মুনাফার আশায় প্রতিযোগীতায় নামে। আর এতে করে পকেট ফাঁকা হয় সাধারণ ক্রেতাদের।

নিয়মিত বাজার মনিটরিং ব্যবস্থায় গাফিলতিকে দায়ী করে ব্যবসায়ীরা একের পর এক সিন্ডিকেট করে বাজারে পণ্যের দাম বাড়িয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে বাজার মনিটরিং জোরদারের মাধ্যমে সকল নিত্য পণ্যের মূল্য সর্বসাধারণের নাগালের ভেতরে রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএনএস/জেএস

খুলনা,বেগুন

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close