• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

অসময়ে পানির ঢল, তলিয়ে গেছে হাওরের ফসল

প্রকাশ:  ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৬:৫২ | আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৬:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

উজান থেকে অসময়ে আসা পানির ঢলে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের ফসল। সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে বাঁধ এবং ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনা থালা হাওরের বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবার বিকালে নতুন করে এ তিন হাওরে পানি প্রবেশ করে। এতে অন্তত চার হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে শাল্লা উপজেলার কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে। হাওরের ৪০ হেক্টর ফসলি জমি নিমিষেই তলিয়ে যায়। তবে এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর আওতার বাহিরে। গত তিনদিন ধরে স্থানীয় কৃষকেরা দিন-রাত মাটি কেটেও বাঁধটিকে টিকিয়ে রাখতে পারেনি।

স্থানীয়রা পাউবো-কে দোষারোপ করে জানান, শাল্লা ব্রীজের পাশে হাওর রক্ষা বাঁধের একটি প্রকল্প দিলে অকাল বন্যায় চোখের সামনে তলিয়ে যেত না এই ফসলি জমি। অন্যান্য বছর এই জায়গায় প্রকল্প দেয়া হলেও এবছর কোনো প্রকল্প না দেয়ায় অকাল বন্যায় তলিয়ে ভেসে গেছে ফসলি জমি। কাঁচা ধান তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। নিঃস্ব হয়ে গেছেন কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ঘুঙ্গিয়ারগাঁও ও ডুমরা গ্রামের লোকজন এই হাওরেই বোরো ধান চাষ করেছেন। এই দুই গ্রামের শতভাগ ভাগ মানুষের ভাগ্য পানিতে গেছে। স্থানীয়দের দাবি প্রায় ৬০/৭০ হেক্টর জমি অকাল বন্যায় ভেসে গেছে। তবে প্রশাসনের দাবি- ডুবেছে ৪০ হেক্টর জমি।

উজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে ৪০ হেক্টর জমি বোরো চাষ হয়েছে। তবে এই হাওরের কোনো বোরো ধান এখনো কাটা হয়নি। ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের কৃষক রাজন রায় বলেন, ৮ কিয়ার জমিতে বোরো চাষ করেছি। সবকিছু তলিয়ে গেছে। বাঁচার কোনো পথ নেই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে কীভাবে নিয়ে চলবো সেই দুশ্চিন্তায় আছি। পানি আসার আগে কয়েকবার প্রশাসনের কাছে গেছি- একটা ব্যবস্থা করার জন্য। পরে নিজেরাই মাথায় করে মাটি ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছি। শেষ মুহুর্তে আমরা চেষ্টা করে গেলাম। কিন্তু রক্ষা করতে পারলাম না আমাদের বোরো ধান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তালেব জানান, কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতার বাহিরে। এরপরও আমরা চেষ্টা করেছি ফসলি জমি রক্ষা করার। কিন্তু উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আর রক্ষা করা সম্ভব হয়নি ।

অপরদিকে, ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চন্দ্র সোনারথাল হাওরে কংস নদের ডুবাইল বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে হাওরে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল। এ অবস্থায় হাওরের পানি আর কৃষকের চোখের চল মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।

পূর্বপশ্চিম- এনই

অসময়ে পানির ঢল,সুনামগঞ্জ,হাওর

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close