• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জেলে সেজে হত্যা মামলার আসামি ধরল পুলিশ

প্রকাশ:  ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৩:২০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর সোনাগাজীতে জেলে সেজে কৃষক বেলাল হত্যা মামলার পলাতক আসামি আবদুল হাই (৪৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে নদীতেও ঝাঁপ দিয়েছিল ওই আসামি। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে ছোট ফেনী নদী থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে নদীতেও ঝাঁপ দিয়েছিল ওই আসামি। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। সে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরদরবেশ গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ দাইয়্যান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, আবদুল হাই দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করেছিলেন। গত কয়েকমাস যাবৎ ছোট ফেনী নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরত এবং নদীতে নৌকার ওপর রাত্রিযাপন করত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোনাগাজী থানা পুলিশের দুটি দল জেলে সেজে আরেকটি নৌকায় করে জাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যায়। নদীর মাঝ পথে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আবদুল হাই নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরাও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কেটে আবদুল হাইকে গ্রেপ্তার করে।

উল্লেখ্য; জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০২১ সালের ৩১ মে সোমবার ভোরে চরদবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরদরবেশ গ্রামের হাদা ব্যপারী দোকান এলাকায় কৃষক বেলায়েত হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে পাশের বাড়ির প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আমির হোসেন ননা মিয়া বাদী হয়ে আবদুল শুক্বুর, তার ছেলে আবুল হাসেম, ভাই আবদুল মালেক, জামাই নিজাম উদ্দিন, নাতি আনোয়ার হোসেন মিন্টু, বাহার উল্যাহ, শেখ ফরিদ, সালেহ আহম্মদ লাত, শেখ টিপু ও আবদুল হাই সহ দশ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

সোনাগাজী মডেল থানার এসআই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ খান দশজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে দুই বৃদ্ধ সহোদর আবদুল শুক্কুর ও আবদুল মালেক আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। বাকি আসামিদের মধ্যে সালেহ আহম্মদ লাতু, শেখ টিপু ও আবুদল হাই শুরু থেকেই পলাতক ছিল। বর্তমানে লাতু ও টিপু পলাতক রয়েছে। আবদুল হাই সহ ছয় আসামি কারাগারে গেল।

পুলিশ আরও জানায়, উত্তর চরদরবেশ গ্রামের হাদা ব্যাপারী দোকান এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে আবদুল শুক্বুর গংদের সাথে প্রতিবেশি নূর ইসলামের ছেলে বেলায়েত হোসেন বেলাল গংদের সাথে দীর্ঘ দিন যাবৎ জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পূর্ব বিরোধের জেরে আবদুল শুক্কুরের ছেলে আবুল হাসেমের সাথে বেলায়েত হোসেন বেলালের ভাই আমির হোসেন ননা মিয়ার সাথে হাদা ব্যাপারীর দোকানে ২০২১ সালের ৩০ মে সন্ধ্যায় হাতাহাতি হয়। উপস্থিত লোকজন উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করে দেন।

এ ঘটনার জেরে ভোর ৩১মে ভোর পাঁচটার দিকে বেলায়েত হোসেন বেলাল ও তার ভাই নূরনবী মাসুদ তাদের বাড়ির পশ্চিম পাশে মহিষের দুধ সংগ্রহ করতে গেলে আবুল হাসেমের নেতৃত্বে তার আত্মীয়স্বজনরা মিলে বেলাল ও মাসুদের উপর অতর্কিত হামলা করে। তাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। আহতদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে সকাল সাতটার দিকে বেলায়েত হোসেন বেলাল মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এএএম/জেএস

ফেনী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close