• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ধামরাইয়ে রাতের আঁধারে রাস্তার মাটি লুট

প্রকাশ:  ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৫:২১
সাভার প্রতিনিধি

ঢাকার ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের একটি রাস্তার মাটি কেটে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি মাটি খেকো চক্রের বিরুদ্ধে। এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে দীর্ঘদিনের চলাচলের এই রাস্তার মাটি কেটে জনগণের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এত চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসীসহ যাত্রী সাধারণ। এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটার দিকে এবং ১৯ এপ্রিল বেলা ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার একটি আঞ্চলিক রাস্তার মাটি কেটে জনগণের চলাচল বন্ধ করা হয়। এর পর ২০ এপ্রিল রাতে ধামরাই থানায় চারজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন শরিফুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী যুবক।

অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার ফজর আলীর ছেলে জাকির হাসান (২৮), ফারুক হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৭), কাবিলার ছেলে জুয়েল রানা (২৯), সাবেদ আলীর ছেলে ফরিদ হোসেন (৩০)।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশের ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি কারখানার শ্রমিকসহ কয়েকশত মানুষ চলাচল করেন। জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে ওই রাস্তাটি নির্মান করা হয়। তবে একটি প্রভাবশালী মহল রাস্তার জমির মালিকানা দাবি করে এই মাটি কেটেছেন।

ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম জানান, সড়ক ও জনপথের সড়কের মাটি (এক্সকেভেটর) ভেকু দিয়ে কেটেছে জাকির হোসেন, জুয়েল রানা, সোহেল রানা ও ফরিদ হোসেনসহ তাদের সহযোগিরা। এর কারণে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এই রাস্তা কাটায় সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যারা কারখানায় চাকরি করেন তারা। তারা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে কারখানায় যাতায়াত করে। এখন প্রায় এক দেড় কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে তারা কারখানায় যায়।

তিনি আরো বলেন, জাকির ও তার সহযোগীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস করে না। তবে তারা সড়কের মাটি কেটে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে তার বিচার চাই আমরা। এলাকার সবার পক্ষ থেকেই আমি অভিযোগ দায়ের করেছি।

অভিযুক্ত ফরিদ হোসেন জানান, যাদের জমি তারাই মাটি কেটেছে। এটা সড়ক ও জনপথের জায়গা না। এটা ব্যক্তি মালিকানার জায়গা। নিজের জমি না হলে এভাবে কি কেউ মাটি কেটে নেয় নাকি? যাদের জমি তারা মাটি কেটেছে এতে জনগণের কি?

এ বিষয়ে সোমভাগ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজাহার আলী জানান, আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কয়েক বছর পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ও স্থানীয়দের সহায়তায় ওই সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। সড়কটি কাটায় জনগণের দুর্ভোগ বেড়েছে। যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।

সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রভাষক আওলাদ হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে এলাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। থানা যদি বিষয়টি আমাকে সমাধানের দায়িত্ব দেয়, তাহলে আমার আন্তরিকতার কমতি থাকবে না। যেহেতু থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেহেতু বিষয়টি থানা দেখবে।

ধামরাই থানার অফিসার্স ইনচার্জ আতিকুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস উল হাসান মারুফ বলেন, আমাদের জমি কেউ দখল করতে এলে আইনি ব্যবস্থা নেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

পূর্বপশ্চিম/এমএস/এনএন

ধামরাই

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close