• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে বেদে শিশুরা

প্রকাশ:  ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৩৫
ঠাকুরগাঁ প্রতিনিধি

সারা বছর দলবেঁধে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ায় বেদেরা। কোথাও সুবিধা মতো থাকার একটু জায়গা পেলে পলিথিনের তাবু খাঁটিয়ে সেখানে থেকে যান কিছু দিনের জন্য। ভাসমান এই মানুষদের যেমন নেই কোনো ঠিকানা তেমনি হয়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পড়ার সুযোগ। এমন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলেও বেদেরা স্বপ্ন দেখেন একদিন না একদিন পরিবর্তন আসবে তাদের সন্তানদের জীবনে।

সরেজমিনে গিয়ে যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেওয়া বেদে সম্প্রদায়ের একদল শিশুর ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে এবং শত প্রতিকূলতার মাঝেও সন্তানদের সামান্য অক্ষরজ্ঞান দানের জন্য চেয়ার টেবিল ছাড়াই খোলা আকাশের নিচেই পড়াচ্ছেন এক যুবক। ভোর হতে না হতেই বই খাতা হাতে তাবু ছেড়ে পাঠশালার পাটিতে বসে পড়ে শিশুরা। চোখে-মুখে উপচে পড়ে উচ্ছ্বাস আর জানার আগ্রহ।

শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা পাঠশালায় অ, আ, ১,২ গুনতে শিখেছি, ছড়াও শিখেছি। ছড়া শুনতেও অনেক ভালো লাগে।

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাফিদ করিম জানান, আমার চোখে দেখা এই প্রথম একটি ব্যতিক্রমী পাঠশালা। পাঠশালায় রয়েছে উদ্যমী শিক্ষক আর উচ্ছ্বসিত একদল শিক্ষার্থী। আমি বেদে সম্প্রদায়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা দেখে অনেক আনন্দিত।

আরেক শিক্ষার্থী হুমায়রা শাহারিন বলেন, অক্ষরজ্ঞান ছাড়া মানুষ পৃথিবীতে অচল। বেদে সম্প্রদায়ের সন্তানদের একটু হাতে কলমে শিখিয়ে দিলেই তারা চলে ফিরে খেতে পারবে। কিন্তু তারা নিরুপায়।

অভিভাবকেরা জানান, আমাদের বেদে সম্প্রদায় একটি যাযাবর জনগোষ্ঠী। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। আজ এখানে তো কাল ওখানে। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে আমাদের অস্থায়ী ভাবে বসবাস। আমরা পড়াশোনার সুযোগ পাইনি। আমাদের সন্তানেরা পাঠশালার শিক্ষক নুরুল ইসলামের সহযোগিতায় পড়ালেখা করছে এতে অনেক ভালো লাগছে।

পাঠশালার শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন কাজের ফাঁকে যে সময় পাই ওই সময় থেকে কিছুটা সময় বাচ্চাদের লেখাপড়া শেখানো হয়। এই পাঠশালা আমার গন্তব্যহীন যাত্রা সাথী।

পূর্বপশ্চিমবিডি/আরএইচএম/এনজে

খোলা আকাশ,বেদে শিশু

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close