• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

জার্সি পতাকা ছাড়াই টিনের ঘরে মেসি

প্রকাশ:  ০৯ জুন ২০২২, ০০:৩৯
অনলাইন ডেস্ক

কাতার বিশ্বকাপের বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। প্রতি চার বছর বাদে ফুটবল বিশ্বকাপ এলেই গোটা বাংলাদেশ সাজে নতুন রূপে। প্রিয় দলের পতাকা দিয়ে নিজেদের বাড়ি রাঙানো ফুটবলপ্রেমী বাঙালির পুরোনো অভ্যাস। তবে বিশ্বকাপ এলেই আকাশে ওঠে জার্সি-পতাকার দাম, ফলে অনেক মধ্যবিত্যের কাছে এসব নিতান্তই বিলাস। তবে এবার ব্যতিক্রম উদাহরণ সৃষ্টি করে সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেন জামালপুরের এক তরুণ।

শামিম হাসান নামের ঐ যুবকের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের চরদাদনা পূর্বপাড়া গ্রামে। অতীতে এঁকেছেন নিজের প্রিয় দল আর্জেন্টিনার পতাকা ও পছন্দের তারকা লিওনেল মেসির ছবি।

নিজের শখের কবুতর বিক্রি মনিহারি দোকানের ব্যবসা করে জমানো এই কষ্টের টাকা দিয়ে শিল্পের এক অপরূপ নমুনা দেখিয়েছেন ২১ বছর বয়সী এই গুণী তরুণ। ইতিমধ্যে হাজারো আর্জেন্টাইন ভক্তের প্রশংসা পাইয়েছেন শামিম। তার বাড়িটি দেখতে ভীড় জমাচ্ছে স্থানীয়রা।

শামিম হাসান বলেন, ‘আমি ছোট বেলা থেকেই আর্জেন্টিনার ভক্ত। মেসির খেলাও খুব ভালো লাগে। ২০১০ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলা দেখি। গত কয়েকবার যাই হোক, এইবার আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ নিবে। তাবে আমি আমার স্বপ্ন পূরন করেছি। নতুন বাড়ির সামনের টিনে আর্জেন্টিনার পতাকা আর তার মধ্যে মেসির ছবি আঁকছি। এইটা আমার ছোট বেলার স্বপ্ন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখানেই আমার কাজ শেষ হয় নাই। ঘরের চালে আর্জেন্টিনার পতাকার ও এর মাঝে ইংরেজিতে আর্জেন্টিনা লেখা থাকবে। আর টিনের বেড়ার এক পাশে আমার বাংলাদেশের পতাকা আঁকা থাকবে। এইসব কাজ করতে আরো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। তারপরেই আমার কাজ শেষ।’

শামিম বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে প্রথমে একটা ডিজাইন করি। তারপর আমরা নিজেরাই বাজার থেকে রং কিনে এনে নিজেরাই টিনের বেড়াই রং করি। সব কাজ আমরাই করি। কোনো ভাড়া করা লোক আনি না। কোনো ডিজাইন করতে না পারলে নেটে দেখে শিখে নেই।’

খরচ সম্পর্কে শামিম হাসান বলেন, ‘আমার অনেকগুলো কবুতর ছিলো। এসব বিক্রি কইরে আর দোকানের বেচা কিনা থাইকে কিছু টাকা জমাইছি। জমানো ১০ হাজার টাকার মধ্যে এই কাজটা করার চিন্তা করতাছি। এখনই ৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। বাকি কাজ শেষ করতে আরো ৫ হাজার টাকার বেশি লাগবে।'

ছেলের এমন কাজে অনেক খুশী কৃষক বাবা বাদশাহ মিয়া ও গৃহিনী মা মেহেরা বেগমে। ৭ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট শামিম। ইসলামপুর কলেজে ডিগ্রি ৩য় বর্ষে লেখাপড়ার পাশাপাশি মুদি দোকানের ব্যবসা করে নিজের খরচের সাথে পরিবারেও সহায়তা করেন এই গুণী তরুণ।

শামিম হাসানের পিতা বাদশাহ মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে নিজের হাতে এতো সুন্দর করে আর্জেন্টিনা আর মেসির ছবি আকছে। আমি তো অবাক। আমার অনেক খুশি লাগছে। এলাকার যে কোনো জায়গায় গেলে সবাই আমার ছেলের কথা বলে। ছেলের এমন কাজে সত্যি আমি অনেক খুশি।’

আর্জেন্টিনার পতাকা ও লিওনেল মেসিতে সজ্জিত শামিমের বাড়িটি দেখতে ভীড় জমিয়েছেন স্থানীয় ষাটোর্ধ বাসিন্দা ইউসূফ আলীও। তিনি বলেন, ‘বাবা আমি এই জীবনে মেলা কিছু দেখছি। কিন্তু এমনটা দেহি নাই। আমিতো আর্জেন্টিনার সাপোর্টার তাই এইডে দেখতে ভালাও লাগে। পুলাপান শখ কইরে এডা জিনিসি বানাইছে ভালাই হয়ছে, খারাপ না।’

পূর্ব পশ্চিম/ম

মেসি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close