• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সন্তানদের সামনে মাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশ:  ১৫ জুলাই ২০২২, ১৫:৩৩
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনার কয়রায় পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষার জের ধরে নির্মম নির্য়াতনের শিকার হয়েছেন শামীমা নাসরিন (৩৭) নামের এক নারী। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছন।

সোমবার (১১ জুলাই) সকালে উপজেলার গিলাবাড়ি কুচির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনারদিন প্রতিপক্ষরা তাকে সন্তানদের সামনে গাছে বেধে মারধর করে। এসময় শ্লীলতাহানিরও ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

পরে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় জায়গীরমহল হাসপাতাল ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঐদিন বিকেলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন একই এলাকার

লিয়াকত গাজী, সাখাওয়াত, নূর আলম।

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, শামিমা দীর্ঘ দিন ধরে বাবার বাড়ির পাশে জমি কিনে সেখানে স্বামী-সন্তানসহ বসবাস করে আসছেন। তার বাবা গফ্ফার গাজীর ২ বিঘা জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিল অনেকদিন ধরে।

বৃদ্ধ বাবা একা হওয়ায় প্রায়ই তারা সংঘবদ্ধ হয়ে তাকে বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছিল। পরে ঘটনার দিন লিয়াকত গাজী দলবল নিয়ে হাজির হয়ে জোরপূর্বক সেখানে একটি নতুন ঘর তৈরি করা শুরু করে। এসময় ভুক্তভোগী নারী ভাবী সালমা খাতুন এতে বাঁধা দেয়।

এসময় মধ্যে খালেক ও আসফার গাজী শামীমাকে বাড়ি থেকে বের করে আনার নির্দেশ দিলে রফিকুল, সালাউদ্দিন, সাইফুল, সোয়েব তাকে জোরপূর্বক টেনে-হেঁচড়ে বাড়ির ভেতর থেকে বের করে নিয়ে দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে ফেলে। এরপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এসময় তার দু’ছেলে জাফর ও আহাদ গাজী সেখানে উপস্থিত থাকলেও কিছুই করার ছিল না তাদের।

এক পর্যায়ে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেলে তার এক ভগ্নিপতি রুস্তম গাজী জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে কয়রা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

ঘটনাস্থল এসআই মাসুদ শামীমাকে উদ্ধার করে কয়রা উপজেলার জায়গীর মহল হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঐ দিন বিকেলে তার অবস্থা আরও অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেলের সার্জারী বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে বলে জানায় চিকিৎসকরা।

এ ঘটনায় ভূক্তভোগীর স্বামী আবুল কালাম সানা বলেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। মোবাইলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে স্ত্রীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা নেন।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও অভিযুক্তরা এরকম ঘটনা ঘটিয়োছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী ঐ ঘটনায় সালিশীও করলেও সমাধান মেলেনি তাদের।এবিষয়ে তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিও করেন তিনি।

এ বিষয়ে রুস্তম গাজী বলেন, তার শ্বশুর ও শ্যালক নিরীহ প্রকৃতির মানুষ। প্রতিপক্ষ লিয়াকত গং তাদের ২ বিঘা জামির দখল নিতে প্রায়ই তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এমনকি ঘটনার পরও তারা মোবাইলে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, জমি-জমা তাদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা শুনেছেন। তবে ঐদিন তিনি এলাকার বাইরে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারেছেন না।

মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী বলেন, জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তাদের বিরোধ চলে আসছে। ঘটনায় কয়েকবার সালিশ করা হলেও সমাধান না হওয়ায় এখন আর কেউ এবিষয় নিয়ে কথা বলে না।

কয়রা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এ.বি.এম.এস. দোহা বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/নাদীর/এআই

অত্যাচার-নির্যাতন

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close