• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ভর্তি পরীক্ষায় রোগী সেজে প্রক্সি দিতে গিয়ে ডাক্তারসহ আটক ৪

প্রকাশ:  ২৭ জুলাই ২০২২, ১১:১৫ | আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১১:৪৪
খুলনা প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় রোগী সেজে অন্যের হয়ে অংশ গ্রহণের দায়ে খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমের রায়সহ ৪ প্রক্সি পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেককে এক বছরের করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের 'এ' ইউনিটের বিভিন্ন শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে ধরা পড়েন তারা।

দন্ডাপ্রাপ্তরা হলো, মো. এখলাসুর রহমান, সজিব আহমেদ, জান্নাতুল মেহজাবিন ও চতুর্থ শিফটে অভিনব কায়দায় রোগী সেজে প্রক্রির দায়ে খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমের রায় আটক হয়। তাদেরকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়োজিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ তাদেরকে এ সাজা দেন।

জানা যায়, খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমের রায় রোল ৮৪৬৪৮-এর পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমীন রিয়াদের পরিবর্তে শেখ রাসেল মডেল স্কুলে প্রক্সি পরীক্ষা সম্পন্নও করলেও ভাগ্যের বিড়ম্বনায় শেষে ধরে পড়ে যান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমান জানান, পরীক্ষার মূল প্রার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমীন রিয়াদের পরিবর্তে গোটা মাথা এবং মুখে ব্যান্ডেজ করে পরীক্ষার ক্রেন্দ্রে প্রবেশ করে ডা. সমের। পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক জাকির হোসেন ও শেখ রাসেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামকে কৌশলে মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্টের কথা জানান তিনি।

সমের পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষকদের সকলকেই জানিয়েছিলেন, সকালবেলায় তিনি মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করেছেন। এক্সিডেন্টের পর মাথা ও মুখে ব্যান্ডেজ করে প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট নিয়ে তিনি পরীক্ষা দিতে এসেছেন।

ডাক্তার সমেরের এই অ্যাক্সিডেন্টের কথা শুনে পরীক্ষার রুমের দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা বলেন এবং অ্যাম্বুলেন্সও ডাকতে চান। কিন্তু ডাক্তার সমীর পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্ব শিক্ষকদের জানান, পরীক্ষা শেষে তিনি ট্রিটমেন্ট নেবেন। এরপর সাড়ে তিনটায় ‘এ’ ইউনিটের চতুর্থ শিফটের পরীক্ষা শুরু হয়। মাথা ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় তিনি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তিনি চলে যাওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়া করেন।

কিন্তু পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে একা যেতে দিতে রাজি হননি। দুই শিক্ষক ডাক্তার সমেরের মাথার সিটি স্ক্যানসহ চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এজন্য তিনি ডা. সমীরের অভিভাবককে ডাকতে বলেন। এরপরও ডা. সমের একা যেতে চান। কিন্তু শিক্ষকরা তাকে যেতে দেননি। উপায়ন্তর না পেয়ে ডাক্তার সমের মূল পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমিনকে তার অভিভাবক হিসেবে ডাকেন।

এর পর রাহাত আমিন সেখানে উপস্থিত হলে দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে চিনে ফেলেন এবং প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি তাদের আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনে নিয়ে যান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন ড. সমের।

সর্বশেষ পরীক্ষার জালিয়াতির দায়ে ডাক্তার সমেরকে এক বছর ও প্রার্থী রাহাতকে এক মাসেরসহ অপর ৩ প্রক্রি পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেককে এক বছরের করে কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ।দন্ডপ্রাপ্তদেরকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

পূর্বপশ্চিম/ম

রোগী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close